স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানের থানচি উপজেলার লোয়াংমুয়াল পাড়া রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারী) রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে র‌্যাব। এ অভিযানে র‌্যাবের আটক ২০ জনের মধ্য কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ ৩ সদস্য ও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া ১৭ জঙ্গি। উদ্ধার করে বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও ৭ লাখ টাকা। অভিযানে আটক হয় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ ৩ সদস্য লাল মোল সিয়াম বম, ফ্লাগ ক্রস, মালসম পাংকুয়া (৫২), জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া ১৭ জঙ্গি কুমিল্লা সদর মো: আস সামী রহমান সাদ (১৯), বরগুনা, বেতাগী মো: সোহেল মোল্লা সাইফুল্লাহ (২২), পটুয়াখালী সদর মো: আল আমিন ফকির মোস্তাক (১৯), কুমিল্লা, লাঙ্গলকোট মো: জহিরুল ইসলাম ওমর ফারুক (২৭), পটুয়াখালী সদর মো: মিরাজ শিকদার দোলন (২৬), মুন্সিগঞ্জ, টঙ্গীবাড়ি রিয়াজ শেখ জায়েদ (২৪), পটুয়াখালী, মহিপুর মো: ওবাইদুল্লাহ সাকিব (২০), পটুয়াখালী, মির্জাগঞ্জ জুয়েল মাহমুদ (২৭), টাঙ্গাইল, ধানবাড়ী মো: ইলিয়াছ রহমান (৩২), ঝালকাঠি সদর মো: হাবিবুর রহমান (২৩), কুমিল্লা সদর মো: সাখাওয়াত হোসেইন (২১), বরিশাল, কোতয়ালী, মো: আব্দুস সালাম রাকি (২৮), কুমিল্লা, লাকসাম যোবায়ের আহমদ (২৯), পটুয়াখালী, দশমিনা মো: শামীম হোসেন (২৬), হবিগঞ্জ, মাধবপুর তাওয়াবুর রহমান সোহান (২০), বরিশাল মো: মাহমুদ ডাকুয়া (২০), মাগুরা মোহাম্মদ আবু হুরাইরা (২২)। অভিযানের পর আটক কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ ৩ সদস্য ও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া ১৭ জঙ্গিসহ ২০ জনকে বান্দরবান র‌্যাব-১৫ হেফাজতে রাখা হয়। উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও ৭ লাখ টাকা প্রনদর্শ করা হয়।

            এ অভিযানের শেষে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১ টায় জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম হলে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক খন্দকার আল মঈন। এ সময় তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে নতুন জঙ্গি সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য থানচির লোয়াংমুয়াল পাড়া হয়ে রেমাক্রী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৭ রেমাক্রী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গী ও পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করে। র‌্যাবের সাথে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়। গোলাগুলিতে ৮ জন র‌্যাব সদস্য আহত হয়। তারা সবাই ঝুঁকিমুক্ত ও চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ অভিযানে র‌্যাবের আটক ২০ জনের মধ্য কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ ৩ সদস্য ও জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া ১৭ জঙ্গি রয়েছে। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, উগ্রবাদী বই, কনটেন্ট, লিফলেট, ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অস্ত্র ক্রয়ে রক্ষিত ৭ লক্ষ টাকা।

            তিনি আরো জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় অর্থের বিনিময়ে পাহাড়ে অস্থানায় জঙ্গী সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া। হিজরতের নামে উদ্ভুদ্ধ হয়ে ঘর ছাড়া নিখোঁজ ৫৫ জন তরুনের মধ্যে ২৭ জনকে আইনের আওতায় নিতে সক্ষম হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আরও ২৮ জনের খোঁজে র‌্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এ পর্যন্ত প্রথম দফায় ৫ জন, দ্বিতীয় দফায় ১০ জন, তৃতীয় দফায় ২ জন মোট ১৭ জন জঙ্গী এবং তিন দফায় ১৪ জন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেএনএফ সদস্য সংখ্যা প্রায় ২ শত জন।

            প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় আটককৃত লাল মোল সিয়াম বম রেমাক্রী এলাকায় কেএনএফ একজন পুরাতন সদস্য। জঙ্গী বিরোধী অভিযানের পর থেকে তার নেতৃত্বে কেটিসি ও আশেপাশের এলাকা থেকে জঙ্গীদের পাহাড় খেকে আত্মগোপনে সমতলে আসার সব ব্যবস্থা করার দায়িত্ব পাল করে। সে জঙ্গীদের জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদা, রশদ সরবরাহ ও অন্যান্য সব ধরণের সহযোগিতা করত। থানচি ১৪ মাইল এলাকায় তার একটি দোকান আছে। সে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি অনুসরণ করে কেএনএফ সদস্যদের অবগত করত। সে কেটিসি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও অস্ত্র প্রশিক্ষণে অত্যন্ত পারদর্শী।

            প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয় আটককৃত ফ্লাগ ক্রস কেএনএফ একজন নেতৃস্থানীয় সদস্য ও প্রশিক্ষক। সে নাথান বম সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সে নাথান বম ও জঙ্গীদের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করত। সর্বশেষ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১২ জন জঙ্গীকে সে বান্দরবান শহর থেকেনাথান বমের কাছে পৌছে দেয়। এছাড়া সমতল থেকে সব ধরনের পার্সেলতার নামে আসত।

            প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয় আটককৃত মালসম পাংকুয়া কেএনএফ একজন সদস্য। জঙ্গীদের থেকে প্রাপ্ত অর্থনাথান বমের কাছে পৌছে দেয় ছিল তার দায়িত্ব। জঙ্গীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত দিয়ে অবৈধ পথে অস্ত্রসহ সংগঠনিক কাজে বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করত।

খবরটি 360 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen