আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ঘুষ গ্রহণ, মানব পাচার, সহায়তার অস্ত্র ও ত্রাণ সহায়তার সামগ্রী চোরাই পথে বিক্রি ও অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগে একযোগে সেনাবাহিনীর ৩৩ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যে কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা সবাই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন শাখার আঞ্চলিক রিক্রুটমেন্ট কেন্দ্রগুলোর প্রধান। গত মাসে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ওডেসায় সেনা নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ বিষয়ক একটি তদন্ত শুরু করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল। মাত্র এক মাসের সে তদন্তে নিয়োগ দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়ম অব্যবস্থাপনা ও অপরাধমূলক তৎপরতা সংক্রান্ত ১১২ টি অভিযোগ পাওয়া গেছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিভিন্ন আঞ্চলিক শাখার বিরুদ্ধে।

            বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, আমরা সেনাবাহিনীর সব আঞ্চলিক প্রধানকে বরখাস্ত করেছি। কারণ একটি ব্যবস্থা সে সব লোকজনদের দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত যারা জানে যুদ্ধ আসলে কি এবং সে সময় ঘুষ গ্রহণ, উদাসীনতা বা যে কোনো ধরনের দুর্নীতি উচ্চমাত্রার রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। আমাদের সেনাবাহিনী সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। অনেক কর্মকর্তা যেভাবে যোদ্ধাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, যে ভাবে কর্তব্য পালন করছেন তা পুরোপুরি অনৈতিক। দুর্নীতি গ্রস্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত ও বিচারের আওতায় আনার যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে মাঠ পর্যায়ে তার বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর শীর্ষ জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনিকে। এছাড়া বরখাস্ত কার্যকর হওয়ার পর সেনাবাহিনীতে যে সব পদ ফাঁকা হবে, সে সব পদে আগ্রহী প্রার্থীদের নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম এখন থেকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ দেখভাল করবে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

            ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এ পর্যন্ত নিজ বাহিনীর কতজন সেনাসদস্য ও কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে, সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য এখন পর্যন্ত রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন কোনো দেশের সরকার দেয়নি। ইউক্রেনের সরকারি প্রশাসনের একটি বড় ও দীর্ঘস্থায়ী সংকটের নাম দুর্নীতি। আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সূচক অনুযায়ী, দুর্নীতিতে বিশ্বের ১৮০ টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের স্থান ১১৬ তম। গত জুন মাসে একটি বেসরকারি সংস্থার পরিচালিত জরিপ পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ইউক্রেনের ৭৭ শতাংশ মানুষ দুর্নীতিকে দেশের সবচেয়ে বড় সংকট মনে করেন। চলতি বছর জানুয়ারিতে দুর্নীতির অভিযোগে ১১ জন সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছিল জেলেনস্কির নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপর গত মে মাসে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ইউক্রেনের প্রধান বিচারপতিকে। এখনও কারা অন্তরীণ আছেন তিনি।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

খবরটি 518 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen