স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবানে মেঘলা এলাকায় টাইগার পাড়া ও মাঝের পাড়ায় অবৈধ কাঠের ব্যবসায় জড়িত বিএনপি নেতা ও কাঠ ব্যবসায়ী কামাল। অবৈধ কাঠের ব্যবসা করে সে এখন কোটিপতি। অবৈধ কাঠের ব্যবসায় সে করেছে গাড়ি বাড়ি। বান্দরবান সদরের মেঘলা, নীলাচল, কানা পাড়া, ডলুঝিড়ি পাড়া, মাঝের পাড়া, চা বোর্ড এলাকা, চেমীমুখ, গোয়ালিয়া খোলা, রেইচা, টাইগার পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার অবৈধ গাছ কেটে বন উজার ও ক্ষতি করছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। জোট পারমিট ছাড়া এ সব গাছ বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ও বন বিভাগের প্রহরা চৌকি পার হয়ে নিয়ে আসছে বান্দরবান সদরে টাইগার পাড়া ও মাঝের পাড়া এলাকায় তার গাছের ডিপোতে। এখানে শেষ নয় কাঠ ব্যবসায়ী কামালের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন বন বিভাগ সৃজিত বন থেকে চোরা্ই পথে অবৈধ কাঠ সংগ্রহ করার অভিযোগ। বান্দরবান বন বিভাগ নিরব ভুমিকায় কামালের অবৈধ কাঠের ব্যবসায় ফাকি দিচ্ছে সরকারি রাজস্ব ও বিভিন্ন সরকারি কর।

            জানা যায়, টাইগার পাড়া এলাকায় বাগানের মালিক বিএনপি নেতা ও প্রাক্তন কমিশনার উড়োজাহাজ মাহাবু বিশাল বাগানের সেগুন গাছ কেটে অবৈধ কাঠ সংগ্রহ করছে কাঠ ব্যবসায়ী কামাল। বিএনপি মাহাবুবুর রহমান মাহাবু জোট পারমিট না করে বাগানের সেগুন গাছ কেটে বিক্রি করে ভাগিনা জামাই কামাল থেকে। মাহাবু নামে জোট পারমিট নাই বিষয়টি স্বীকার করে বান্দবান বন বিভাগ সদর রেঞ্জ। ব্যক্তি মালিকানা সৃজিত সেগুন বাগানের গাছ বিক্রি করতে জোট পারমিট প্রয়োজন হয়। জোট পারমিট দেয়ার সময় ৩০ ইঞ্চি বা আড়াই ফুটের নিচে কোন গাছ কাটা অনুমতি দেয়া হয়না। মাহাবু সেগুন বাগানে ২ ফুটের নিচে ও ছোট গাছ কাটা হয়। যে কোন বাগান থেকে জোট পারমিট ছাড়া কোন কাঠ পরিবহন নিসিদ্ধ রয়েছে। জোট পারমিট নীতিমালা পালনে সঠিক ভুমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে বান্দরবান বন বিভাগ। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এভাবে কাঠ ব্যবসায়ী কামাল জোট পারমিট ছাড়া এলাকার সৃজিত বিভিন্ন মালিকানা বাগান থেকে সেগুন, গামারী ও অন্যান্য প্রজাতির গাছের কাঠ অবৈধভাবে সংগ্রহ করে জমা রাখে মেঘলা এলাকায় টাইগার পাড়া ও মাঝের পাড়ায় তার গাছের ডিপোতে। পরবর্তীতে সুবিধা সময়ে পুড়ানো জোট পারমিট মাধ্যমে ঢাকায় চালান করা হয়। অন্যদিকে গাছের অবশিষ্ট অংশ প্রতি মণ লাকড়ি ১৫০ টাকা করে এক পিকআপ লাকড়ি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় ইটভাটায় বিক্রি করা হয়।

            জোট পারমিট ছাড়া সেগুন বাগান কাটা বিষয়ে বিএনপি নেতা ও প্রাক্তন কমিশনার উড়োজাহাজ মাহাবু জানান, টাইগার পাড়া এলাকায় নিজের জায়গার মধ্যে পর্যটন নির্মাণের কাজ করছেন। পর্যটন ও বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে প্রায় ৫ একর সেগুন বাগান কেটে কাঠ ব্যবসায়ী ভাগিনা জামাই কামাল থেকে বিক্রি করেছি। কোন জোট পারমিট নেই। এর আগে কামাল থেকে সেগুন বাগান বিক্রি করেছি জোট পারমিট লাগে নাই। সেগুন বাগান বিক্রি করতে জোট পারমিট করার প্রয়োজন মনে করিনা।

            জোট পারমিট ছাড়া সেগুন কাঠ ক্রয়ের বিষয়ে কাঠ ব্যবসায়ী কামাল জানান, টাইগার পাড়া এলাকায় মামা শ্বশুর মাহাবু সেগুন বাগান ক্রয় করেছি। মামা শ্বশুর সেগুন বাগানের কোন জোট পারমিট নেই। আমার মাঝের পাড়া এলাকায় একটি জোট পারমিট আছে। টাইগার পাড়া এলাকায় আমার গাছের ডিপো রয়েছে। এ ডিপোটে জোট পারমিট কাঠ জমা করি।

            এ বিষয়ে বান্দরবান বন বিভাগ সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটু বলেন, টাইগার পাড়া এলাকায় মাহাবুবুর রহমান মাহাবু নামে কোন জোট পারমিট নেই। মাহাবু জোট পারমিট ছাড়া তার সেগুন বাগান কাটলে কোন সমস্যা নেই। সেগুন বাগান থেকে কাটা কাঠ অন্যত্র বা অন্য জায়গায় পরিবহনে বান্দরবান বন বিভাগের অনুমতি ও জোট পারমিট প্রয়োজন হবে। বন বিভাগের অনুমতি ও জোট পারমিট ছাড়া সেগুন বাগান থেকে কাটা কাঠ অবৈধভাবে অন্য জায়গায় পরিবহনের সময় আটক ও জব্দ করার ক্ষমতা রয়েছে বান্দরবান বন বিভাগের। সঠিক অভিযোগের ভিত্তিতে অবৈধভাবে কাঠ পরিবহনের সময় ট্রাকসহ আটক ও জব্দ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খবরটি 470 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen