বিশেষ খবর ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সব অবৈধ ইট ভাটা ৭ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতের আদেশ প্রতিপালনের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। জারিকৃত রুলে রাঙ্গামাটির, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বিভিন্ন স্থানে লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হওয়া সব ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত। একই সঙ্গে অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স বিহীন ইটভাটা পরিচালনার জন্য ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩-এর ধারা ৪.৫.১৪.১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না রুলে সেটি জানতে চাওয়া হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

            আদালত আরেক আদেশে লাইসেন্স ছাড়া পরিচালনা করা সব ইট ভাটার তালিকা আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক, তিন জেলার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ মোট ২৪ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেছে হাইকোর্ট।

            পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ইট ভাটায় পাহাড় কেটে মাটি সংগ্রহ ও বনের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) একটি রিট দায়ের করে।

            জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। এসব ইটভাটায় পাহাড় কেটে মাটি কাঁচামাল হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ৪ ধারা অনুযায়ী কোনো ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারবে না। অবৈধভাবে ইটভাটা চালালে ধারা ১৪ অনুসারে দুই বছরের সাজার বিধান আছে। তা সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার লাইসেন্স বিহীন পরিচালিত সব ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এছাড়া এই আইনের ৫ ধারায় পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার নিষিদ্ধ ও তা করলে একই আইনের ১৫ ধারায় দুই বছরের সাজার বিধান রয়েছে। তারপরও পাহাড়ের মাটি ইট ভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে পার্বত্য এলাকার অনেক পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি হয়েছে। এসব কারণে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। আদালত এই রিটের শুনানি নিয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছে।

খবরটি 438 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen