বিশেষ খবর ডেস্ক: দেশের রাজধানী ঢাকায় পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের বর্ণাঢ্যে আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উদযাপিত করা হয়। শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) সকাল ৮.৩০ টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম। অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যেন্দ্র কুমার সরকার, অতিরিক্ত সচিব মো: আমিনুল ইসলাম, যুগ্মসচিব আলেয়া আক্তার, যুগ্মসচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম এনডিসি, যুগ্মসচিব মো: হুজুর আলীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

            পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর বেইলী রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্স বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়। অনুষ্ঠান শুরুতে কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে ফেস্টুন উড়ান ও শান্তির প্রতীক ২৫ টি কবুতর অবমুক্ত করে বিভিন্ন কর্মসুচি শুভ সুচনা করা হয়। এরপর পার্বত্য কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। এ সময় বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন তিন পার্বত্য জেলার মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম চাকমা ও বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গা। মুখ্য আলোচক বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি।

            প্রধান অতিথি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে প্রথমে দুইটি কাজ করেন। যা পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হওয়ার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রথমত, জিয়া পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের দ্বার উন্মোচন করেন এবং বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন জেলা হতে বাঙ্গালিদের নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসন করেন। পাহাড়ী জনগোষ্ঠী জেনারেল জিয়ার সে সিদ্ধান্ত কোনোভাবে মেনে নিতে পারেনি। এর ফলে পুনর্বাসিত বাঙ্গালিদের সাথে পাহাড়ীদের এক অবশ্যম্ভাবী বিরোধের সৃষ্টি হয়। এভাবে কয়েক হাজার উপজাতি পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে উদ্বাস্তু হয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় নেয়।

            পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে মন দিয়ে অনুধাবন ও চিহ্নিত করেছিলেন। খুনের বিনিময়ে খুন নয়, প্রতিশোধ নয়, একটা সুন্দর পরিবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। একে তিনি রাজনৈতিকভাবে সমাধান করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ১৯৯৭ সালের ০২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে একটি শান্ত পরিবেশ গড়ে ওঠে ও সাধারণ মানুষের মনে ফিরে আসে স্বস্তি। তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরে একটি গুলি ফোটানো হয়নি বা কাউকে জীবন বা প্রাণ দিতে হয়নি। পার্বত্য অঞ্চলে মাঝে মধ্যে যে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও সংঘাত হয় তা আমাদের সুখ দিবে না। তিনি সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ পরিহার করে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

খবরটি 398 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen