জাতীয় ডেস্ক: শুল্ক-জটিলতা’য় প্রায় ছয় মাস আটকে থাকা পুলিশের ২০টি সাঁজোয়া যান (বিশেষায়িত যান) অবশেষে বন্দর থেকে খালাস পাচ্ছে। ছয় মাসের মধ্যে ৭২ কোটি টাকা শুল্ক্ক পরিশোধের শর্তে গাড়িগুলো ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এখন চট্টগ্রাম বন্দরে এ-সংক্রান্ত বাকি কার্যক্রম চলছে। শিগগির এগুলো পুলিশের পরিবহন খাতে যুক্ত হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ডোনেশন হিসেবে জাপান এই গাড়িগুলো দেয়। সেগুলো প্রায় ছয় মাস আগে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। তবে শুল্ক্ক জটিলতায় সেগুলো ছাড় করা সম্ভব হয়নি। যে প্রকল্পের আওতায় গাড়িগুলো এসেছে, সেখানে এত অর্থ বরাদ্দ নেই। ডিএমপির সক্ষমতা বৃদ্ধির ওই প্রকল্পের আওতায় আরও গাড়ি আনা হচ্ছে। সব গাড়ির জন্য শুল্ক্ক হিসেবে বরাদ্দ আছে ৩৯ কোটি টাকা। অথচ এই ২০টি গাড়িতেই শুল্ক্ক দিতে হবে ৭২ কোটি টাকা। এ কারণে বিশেষায়িত যান হিসেবে এগুলোর শুল্ক্ক মওকুফের চেষ্টা চালানো হয়। এ ব্যাপারে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর একাধিক বৈঠকও হয়েছে। তবে তা পুরোপুরি ফলপ্রসূ হয়নি। শেষে বিলম্বে শুল্ক্ক পরিশোধের শর্তে গাড়ি ছাড়ের ব্যবস্থা হয়।
ডিএমপি সূত্র জানায়, বর্তমানে ডিএমপির এপিসি, আর্মার্ড ভ্যান ও ওয়াটার ক্যাননসহ প্রায় ৪০টি বিশেষায়িত যান আছে। জাপান থেকে পাওয়া সাঁজোয়া যানগুলো যুক্ত হলে ডিএমপির সক্ষমতা আরও বাড়বে। ফলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে ডিএমপি। ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ডিএমপির সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে পাঁচটি ফ্লাডলাইট যান পাওয়া গেছে। জাপান সরকারের অনুমোদিত এজেন্সি জেআইসিএসের মাধ্যমে এগুলো আনা হয়েছে। একই এজেন্সির মাধ্যমে ১০টি আর্মড যান কেনারও চুক্তি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গাড়িগুলো সরবরাহ করা হবে।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, গাড়ির দাম নির্ধারণ নিয়ে ‘ভুলের’ কারণে শুল্ক্কের পরিমাণ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। জাপান থেকে আনা গাড়িগুলোর দাম দেখানো হয়েছিল ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে শুল্ক্ক দিতে হয় ২ কোটি ৮৮ লাখার টাকার মতো। কিন্তু পরে এইচএস কোড স্ক্যান করে বন্দর কর্তৃপক্ষ এর শুল্ক্ক নির্ধারণ করে ৭২ কোটি টাকার বেশি। ফলে এ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। বন্দরেই আটকে থাকে এ গাড়িগুলো।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ বাপ্পী শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, গাড়ির সিসির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয় এইচএস কোড। সেটি স্ক্যান করলেই পণ্যের প্রকৃত তথ্য জানা যায়, নির্ধারণ হয় শুল্ক্কের পরিমাণ। এ ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সংশ্নিষ্টদের হয়তো কোনো ভুল হয়েছিল। পরে তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে শুল্ক্ক পরিশোধের (ডেফার্ড পেমেন্টের) অনুমতি নিয়ে আসে। এ জন্য তাদের ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। বন্দরের বাকি কার্যক্রম শেষে দ্রুত গাড়িগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

খবরটি 459 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen