জাতীয় ডেস্ক: বর্তমান সরকারের অর্জিত সব সাফল্য দেশের মানুষকে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কী অর্জন করেছি, তা বড় কথা নয়। আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। দেশকে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। মৃত্যু ভয় করি না। এ জাতির জন্য যেকোনো আত্মত্যাগে প্রস্তুত। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের জন্য তাঁকে এই নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

            অনুষ্ঠানের শুরুতে কিছুটা বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দলে দলে মিছিল নিয়ে যোগ দেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনা এবং ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। সৈয়দ শামসুল হকের রচনায় ও আলাউদ্দীন আলীর সুরে ‘মর্ম সংগীত’ এবং শামীম আরা নীপার নৃত্য পরিবেশনাসহ বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে অভিজ্ঞানপত্র পাঠ করেন। শুরুতেই শেখ হাসিনার হাতে নৌকার প্রতিকৃতি সংবলিত স্মারক তুলে দেন সৈয়দ শামসুল হক। অভিজ্ঞানপত্র পাঠের পর কাঠের ওপর শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি সংবলিত অপর একটি স্মারক আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর হাতে তুলে দেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

            প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের সাফল্যের বর্ণনা করে বলেন, কোনো তৃতীয় পক্ষের সহযোগিতা ছাড়াই গঙ্গার পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছি। ৬৪ হাজার শরণার্থী ফিরিয়ে এনেছি। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে আমরা তা করেছি। এটা খুব কম সরকার করতে পারে। এটা আমাদের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সাফল্য।

            প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শাসক হতে আসিনি, সেবক হিসেবে এসেছি। আমি এক মুহূর্ত ভুলি না, আমার পিতা এ দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। আমার নিজের কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই।’ তিনি বলেন, ভারতের আইনসভায় দলমত-নির্বিশেষে স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস হয়েছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। আগে অনেকে বিদ্রূপ করতেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। কিন্তু আমাদের ঝুড়ি এখন উন্নয়নে ভরপুর। প্রমাণ হয়েছে, বাঙালি পারে, বাংলাদেশ পারে। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে শিখেছি, মহৎ অর্জনের জন্য মহৎ ত্যাগ প্রয়োজন। তাঁর আদর্শ নিয়েই পথ চলছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে, সবার দোয়া চাই, যাতে বিচারের কাজ সম্পন্ন করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে পারি।

            সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন খাতের সাফল্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অনুপম সেন, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান।

            সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক কমিটির সভাপতি সৈয়দ শামসুল হক। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের আগে আবশ্যিকভাবে ‘দেশরত্ন’ শব্দ ব্যবহারের প্রস্তাব করেন। তখন উপস্থিত সবাই করতালি দিয়ে এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা, ঢাকার দুই মেয়র, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী নেতা, আইনজীবী, পেশাজীবীসহ ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

খবরটি 876 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen