বিষেশ খবর ডেস্ক: বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের কাপ্রু পাড়ায় আদিবাসী ম্রো জনগোষ্ঠীর ভূমিতে আর এন্ড আর হোল্ডিংস (সিকদার গ্রুপ) কোম্পানি কর্তৃক অবৈধভাবে ম্যারিয়ট হোটেল নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনার ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস। বুধবার (১১ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ক্ষোভ ও নিন্দা জানায় সংসদীয় ককাস। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ও স্থানীয়দের দেয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের যে ঐতিহ্যগত, চিরায়ত ভূমিতে বসবাস ও চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন সেখানে তাদের বৈধ অধিকার রয়েছে এ অভিমত ব্যক্ত করে।

ককাস আহ্বায়ক ও সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের ৪৮ কিলোমিটারে নাইতং পাহাড় সংগগ্ন কাপ্রুপাড়া, ইরাপাড়া, দোলাপাড়া ও কলাইপাড়াসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় কয়েকশত আদিবাসী ম্রো পরিবার শত শত বছর ধরে বসবাস ও জুমচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এ ভূমি ম্রোদের ঐতিহ্যগত ও চিরায়ত ভূমি। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি সেখানে সিকদার গ্রুপ প্রায় ১০০০ (এক হাজার) একর ভূমি অবৈধভাবে দখল করে চন্দ্রনাথ পাহাড় নামকরণ করে বিলাসবহুল ম্যারিয়ট হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের তৎপরতা চালাচ্ছে। ফলে সেখানকার বংশপরম্পরায় যে আদিবাসী ম্রো আছেন তারা ভিটে মাটি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। ম্রোদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ নির্মাণ কাজ শুরু হলে চারটি পাড়াসহ আশেপাশের প্রায় দশ হাজার আদিবাসী ম্রো জনগোষ্ঠী উচ্ছেদের মুখে পড়বে বলে ককাস উদ্বিগ্ন। এছাড়া ম্রোদের শ্মশান ভূমি ও পানির উৎস দখল করে সেখানে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে আদিবাসী ম্রো পাড়ায় লাল পতাকা ঝুলিয়ে স্থাপনা নির্মাণের জন্য সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে করে আদিবাসী ম্রো জাতিগত নিধন ত্বরান্বিত হবে বলে সংসদীয় ককাস শংকা প্রকাশ করেছেন। ককাস শংকা প্রকাশ করে আরো উল্লেখ করে যে, এভাবে চলতে থাকলে আদিবাসী ম্রোরা জাতিগত নিধনের শিকার হবেন। তাই অবিলম্বে সিকদার গ্রুপ এর কাজ বন্ধ করে সরকারের পক্ষ থেকে আদিবাসী ম্রোসহ সকল পার্বত্য আদিবাসী জনগোষ্টিকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করার আহবান জানান আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস সদস্যবৃন্দ।

পার্বত্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস আহ্বায়ক ও সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, সাংসদ রাশেদ খান মেনন এমপি, হাসানুল হক ইনু এমপি, র,আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, এ.কে.এম. ফজলুল হক এমপি ও আরোমা দত্ত এমপি, ককাস সাবেক উপদেষ্টা নাজমুল হক প্রধান ও আরেক সাবেক সাংসদ ও জনসংহতি সমিতির নেতা ঊষাতন তালুকদার ও মানবাধিকার কর্মী রানা দাশগুপ্ত, ককাস টেকনোক্র্যাট সদস্য ঢাবি অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, আদিবাসী নেতা সঞ্জীব দ্রং ও জান্নাত-এ-ফেরদৌসী, ককাস কমিউনিটি প্রতিনিধি রবীন্দনাথ সরেন, কাজল দেবনাথ, নির্মল রোজারিও এবং ভদন্ত সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু।

খবরটি 486 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen