জাতীয় ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অবসরে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে অবকাশকালীন ছুটি থাকায় চলতি মাসের  তারিখ প্রধান বিচারপতি শেষ বিচারিক কর্মদিবস পালন করবেন তিনি। বর্তমান প্রধান বিচারপতির অবসরের সময় ঘনিয়ে আসায় আইনাঙ্গনে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে, কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে ফাইল চূড়ান্ত করে সরকার প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন। সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ছাড়া বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি রয়েছে। জ্যেষ্ঠতা অনুসারে তারা হলেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম। তাদের মধ্যে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। বর্তমান প্রধান বিচারপতির পর জ্যেষ্ঠতার দিক দিয়ে তিনি সবার ওপরে। তার রয়েছে বর্ণাঢ্য বিচারিক ক্যারিয়ার। বর্তমানে আপিল বিভাগের ২ নম্বর বেঞ্চে তার নেতৃত্বে বিচারকাজ পরিচালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তার নেতৃত্বাধীন সার্চ কমিটির সুপারিশের আলোকে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে।

            নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ের একাধিক দেশের ২৪ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নাম চূড়ান্ত। তিনি হতে যাচ্ছেন দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি। তবে সরকার বা রাষ্ট্রপতি চাইলে আপিল বিভাগের যেকোনো বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন।

রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন। সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগ দান করিবেন। সংবিধানে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি। তবে দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের যে বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন তার বিষয়ে সম্মতি দিয়ে প্রথমে আইন মন্ত্রণালয়কে জানাবেন। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে ও বিচারপতির ব্যাপারে ফাইল প্রস্তুত করে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পর বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর প্রধান বিচারপতি নিয়োগের গেজেট জারি করবে আইন মন্ত্রণালয়।

            সংবিধানে তো বলা আছে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন। সরকার বহু আগে ঠিক করে রেখেছে প্রধান বিচারপতি কে হবেন। এখন আপিল বিভাগে যারা আছেন সবাই সরকারের আস্থাভাজন। তাই সিরিয়াল অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি হবেন। কোনো বিচারপতির প্রতি সরকারের কনফিডেন্স না থাকলে তখন জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে ফাইল চূড়ান্ত করে সরকার প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেন। সংবিধানে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

            সংবিধান কী বলে: সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচারপতি তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলে রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হলে ক্ষেত্র মতে অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত বা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করবেন। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ-সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারক নিয়োগ দেবেন।

খবরটি 425 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen