জবভ:                                                                                                     উধঃব:১২এপ্রিল ২০২৩

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

পার্বত্যবাসীকে ইউপিডিএফ-এর বৈ-সা-বি শুভেচ্ছা

 

পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ সামাজিক উৎসব উপলক্ষে ইউপিডিএফ-এর সভাপতি প্রসিতখীসা ও সাধারণ সম্পাদক রবি শঙ্কর চাকমা আজ ১২ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বার্তায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যত্র এবং প্রবাসে অবস্থানকারী পাহাড়িদের বৈ-সা-বি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু-বিষু-বিহু-চাংক্রান…) শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

            সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবানে ৮ বম পাড়াবাসীকে হত্যা, দীঘিনালা ও মানিকছড়িতে পর পর হামলা-খুন ও অব্যাহত দমন-পীড়নে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এক অবর্ণনীয় কঠিন দুঃসহ পরিস্থিতিতে ঐতিহ্যবাহী বৈ-সা-বি উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে ইউপিডিএফ নেতৃদ্বয় শুভেচ্ছা বার্তায় উল্লেখ করেন। পাহাড়ে ভয়-ভীতি আতঙ্কের মাঝে শত দুঃখ, গ্লানি, শোক ও বেদনা ক্ষণিকের জন্য ভুলে সবাই যাতে এ মহান উৎসবের দিনে কিছুটা হলেও আনন্দ উৎসবে সামিল হতে পারে, ইউপিডিএফ নেতৃদ্বয় বৈ-সা-বি শুভেচ্ছা বার্তায় সে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্মিলিতভাবে বৈ-সা-বি উদ্যাপনের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব তুলে ধরে ইউপিডিএফ নেতৃদ্বয় বলেন, ১৯৮৪ সালে এক বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকারের ‘ভাগ করে শাসন করার’ নীতির পাল্টা হিসেবে পাহাড়ে বৈ-সা-বি প্রবর্তন ছিল অত্যন্ত সময়োপযোগী। রোয়াংছড়িতে ৮ বম গ্রামবাসীকে হত্যাসহ শাসকগোষ্ঠীর অব্যাহত ষড়যন্ত্র, রাষ্ট্রীয় মদদে সশস্ত্রগোষ্ঠীর প্রকাশ্যে খুন-অপহরণ-মুক্তিপণ আদায় অন্যদিকে অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অনৈক্য ও ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের উস্কানি– এ পরিস্থিতিতে ‘বৈ-সা-বি’র চেতনায় ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম জারি রাখা ছাড়া অন্যকোন বিকল্প নেই।

            প্রাসঙ্গিক কারণে এখানে এটাও উল্লেখ করা আবশ্যক যে, ‘বৈ-সা-বি’ উৎসবে বিশেষত চাকমাদের মূলবিঝুতে প্রাণী হত্যা বা বলি দেয়ার রীতি নেই। আমীষ জাতীয় নয়, উৎসবের প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে হরেক রকমের বুনোশাক-সবজী সমাহারে তৈরি ‘পাজন’। উৎসবের চেতনায় রয়েছে সবার সম্মিলন, ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একাত্ম হওয়া। এখানে বিত্তহীন বিত্তবানের কোন ভেদাভেদ নেই। উৎসবে সামর্থ্য অনুযায়ী পাহাড়ের বিন্নি চালের তৈরি পিঠা-পায়েস-শরবত ও ফলমূল পরিবেশিত হয়। কিন্তু অপসংস্কৃতির কবলে পড়ে এক শ্রেণীর লোক বৈ-সা-বি’কে বিকৃতভাবে উপস্থাপন ও উদ্যাপন করে সমাজে বিত্তহীন ও বিত্তবানদের মধ্যে দূরত্ব ও ব্যবধান রচনা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এতে সমাজে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও ঐক্য দুর্বল হওয়ারসমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে নিজ নিজ পাড়া-গ্রাম ও মহল্লায় ছাত্র-যুবসমাজের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা দরকার।

            এখানে স্মরণ করা যেতে পারে, গত শতকের আশির দশকে পাহাড়িরা যখন একদিকে ফৌজি শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট, অন্যদিকে তখনকার আন্দোলনকারী শক্তির মাঝে লারম াগ্রুপ-প্রীতিগ্রুপে ভাঙ্গন-ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত-প্রাণহানির এক নৈরাশ্যজনক পরিস্থিতিতে সরকারের কূটকৌশলের কারণে সাধারণ পাহাড়িদের মাঝে ঐক্য শিথিল হয়ে পড়ে। পাহাড়ে এ ধরনের নিদারুণ এক অনিশ্চিত ও দিশাহীন পরিস্থিতিতে সকল জাতিসত্তাসমূহকে ঐক্যের চেতনা ও ভ্রাতৃত্বেরবন্ধনে আবদ্ধ করতে ছাত্র-যুবকদের উদ্যোগে ১৯৮৪ সালে সম্মিলিতভাবে বৈ-সা-বি উদ্যাপনের সূত্রপাত ঘটে।

বার্তা প্রেরক

 

নিরন চাকমা

প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ

ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

 

খবরটি 383 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen