বিশেষ খবর ডেস্ক: বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে দ্রুত জিএসপি-প্লাস পাওয়ার প্রস্তুতি বাংলাদেশের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে ইইউ রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। এ সময় ইইউ রাষ্ট্রদূত খুব শিগগিরই বাংলাদেশে একটি ইউরোপীয় চেম্বার অব কমার্স খোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন যা ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম, ভারত ও সিঙ্গাপুরে রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের বাধাগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়।

            বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের অর্থ হলো বর্তমান এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) বাণিজ্য সুবিধা থেকে উত্তরণ, যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার ইইউ-তে প্রবেশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বাণিজ্যের একটি বড় সুযোগ হিসেবে এখন বিদ্যমান। তিনি বলেন, ‘এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের ফলে দেশের জিডিপিতে একটি গুরুতর বাণিজ্যিক ক্ষতি ও নেতিবাচক প্রভাব লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। যা জিএসপি-প্লাস ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কমানো যেতে পারে। শ্রম সংস্কারের ওপর এই জাতীয় কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন নতুন ডিউ ডিলিজেন্স ডাইরেক্টিভসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে প্রবেশে টেকসই প্রয়োজনীয়তা পূরণের দৌড়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্যোগ ও সরঞ্জামকে সমর্থন করছি।

            রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, একক খাত তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং শিল্প বৈচিত্র্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানকে আকৃষ্ট করতে হবে। এটি করার জন্য দেশি-বিদেশি উভয় ক্ষেত্রেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রয়োজন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক সংলাপের মাধ্যমে এই এলাকার সরকারি কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জিএসপি-প্লাসে যোগদানের জন্য বেশ কিছু কঠোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং বড় বিষয় হলো বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জিএসপি-প্লাস সদস্য হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ৩২টি কনভেনশন অনুমোদন করেছে। তিনি আরও বলেন, এখন পরবর্তী ধাপ হলো বাস্তবায়ন। এটি বিশেষ করে শ্রম খাতের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নকে বোঝায়, যে বিষয়ে সরকার ইইউয়ের সঙ্গে একমত হয়েছে। একবার এটি চালু হলে জিএসপি-প্লাস এবং পাইপলাইনে আইনী পরিবর্তন প্রস্তুত করার জন্য ইউরোপীয় ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পরামর্শ এবং সমর্থন করার জন্য এটি আরেকটি কেন্দ্র হয়ে ওঠবে। ইইউ-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে এটি একটি কার্যকর উদ্যোগ হবে।

            বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ২০২১ অর্থবছরে, ইইউ ছিল বাংলাদেশে নেট এফডিআই প্রবাহের সবচেয়ে বড় উৎস। একটি স্থানীয় থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো থেকে নেট এফডিআই প্রবাহ গত পাঁচ বছরে তিন দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা এই সময়ের মধ্যে সমস্ত এফডিআই প্রবাহের প্রায় এক চতুর্থাংশের সমান।

            বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, আইবিএফবির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার, আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএস সিদ্দিকী বক্তব্য দেন।

খবরটি 378 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen