জাতীয় ডেস্ক: পদ্মা সেতুতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জলে-স্থলে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেতুর দুই প্রান্তে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। আছে র‍্যাব-পুলিশ। পদ্মা সেতু নিয়ে কোন কোন মহলের বিরোধীতা ছিল। এখনো আছে। ব্রিজের নাট-বল্টু খোলা নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এই সব কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পদ্মা সেতু ও এর আশপাশ এলাকায় ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শনিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রবিবার ভোর ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় পদ্মা সেতু। স্বপ্নের সেতু দেখতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে লোকজন যাচ্ছেন। অতিউত্সাহী লোকজন নিয়মভঙ্গ করছে। এসবের পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের যোগসূত্র থাকতে পারে। পদ্মা সেতুর উপরে যানবাহন হতে নামা নিষিদ্ধ হলেও অনেকে তা অমান্য করছেন। এমনকি সেতুতে নেমে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি চুরি ও ক্ষতিসাধনের ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থার মধ্যে রবিবার পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামের সই করা একটি চিঠি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট অ্যান্ড সেফটি টিমের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে মূল সেতুর উপরিভাগ এবং মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে টহল ও নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানানো হয়।পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির বলেন, জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ পদ্মা সেতু নিরাপত্তায় কাজ করছে। গোয়েন্দা সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতুর পুরো এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

            আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা যেকোন সময় নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে পারে। যদিও পদ্মা সেতুতে নাশকতা চালিয়ে কিছু হবে না। ফেরির ধাক্কায় সেতুর কোনো ক্ষতি করা সম্ভব না। তারপরও নাট-বল্টু খোলার মতো ঘটনা কেন ঘটবে? মানুষ কেন এতো বেপরোয়া হবে? কেউ কেউ আবার পদ্মা সেতুতে নামাজ আদায় করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে গাড়িতে টহল দিচ্ছেন। এ কারণে টোল প্লাজায় শৃঙ্খলা ফিরেছে। পদ্মা সেতুতে মানুষের হাঁটা-চলা, ঘোরাঘুরি বন্ধ করা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পারাপারের সময় পদ্মা সেতুতে না নামার জন্য টোল প্লাজা এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক সরাসরি টোল দিয়ে বাধাহীনভাবে সেতু পার হতে পারছে। কোন বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাজির হচ্ছেন, বুঝিয়ে সমস্যার সমাধান করছেন।

            র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পদ্মা সেতুতে র‍্যাবের টহল আছে, গোয়েন্দা নজরদারিও আছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলার জন্য র‍্যাব প্রস্তুত আছে তিনি জানান।

            গতকাল বিকালে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজায় পদ্মা সেতুর ইঞ্জিনিয়ার সাপোর্ট অ্যান্ড সেফটি টিমের সমন্বয়ক লে. কর্নেল মো. রবিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী কাজ করছে। সেতুতে যানবাহন থামিয়ে মানুষ নেমে নেমে সৌন্দর্য অবলোকন করছেন এবং ছবি ভিডিও ধারণ করছেন। এতে সেতুতে তীব্র যানজটসহ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া সেতুর ওপর রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি হচ্ছে। এমতাবস্থায় রবিবার বিবিএ অনুরোধে এভোক কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট ও সেনাবাহিনীর ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড থেকে ভ্রাম্যমাণ টহল জোরদার করা হয়েছে। উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে মানুষকে সেতুতে গাড়ি থামানো ও না নামার বিষয়ে বলা হচ্ছে। এ ছাড়া ডিউটি পোস্টের মাধ্যমে সেতুতে কেউ যেন হেঁটে উঠতে না পারে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

খবরটি 373 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen