মো: তুহিন হোসাইন, স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবান জেলা সদরের জ্ঞানরত্ন বৌদ্ধবিহার সংলগ্ন ব্রিগেড এলাকায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাম ভাঙ্গিয়ে মিথ্যা কথা বলে দিনে দুপুরে পাহাড় কাটায় জব্দ করা হয় স্ক্যাবেটর। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে হাসান ও মোমিন নামের দুই পাহাড় খেকোর বিরুদ্ধে সরকারি মামলা করা হয়। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দিনে দুপুরে স্ক্যাবেটর দিয়ে পাহাড় কাটার সময় হোসেন ও মোমিন নামে দুই পাহাড় খেকো ধরা পড়েছে। বিষয়টি বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অবগত করলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি এসিলেন্ট) নার্গিস সুলতানা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্কাভেটর জব্দ করেন এবং পাহাড় খেকো মুমিন ও হাসানের বিরুদ্ধে সরকারি মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এসআই ফিরোজ ও এসআই রাজিব বিশ্বাস।

            জানা যায়, ব্রিগেড এলাকায় সদর উপজেলা ইউএনও নাম ভাঙ্গিয়ে হোসেন ও মোমিন নামে দুই পাহাড় খেকো স্ক্যাবেটর দিয়ে পাহাড় কাটছে। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা তাৎক্ষণিক ভাবে জেলা সদরের ইউএনও উম্মে হাবিবা মিরাকে মুঠোফোনে পাহাড় কাটার অনুমতি দিয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান অবৈধভাবে পাহাড় কাটার জন্য আমি কোন অনুমতি দিইনি। বিষয়টি এলাকাবাসী গণমাধ্যম কর্মীদের জানালে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ  সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখে বিশাল স্কাবেটর দিয়ে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। পরে গণমাধ্যম কর্মীরা এ মাটি কারা কাটছে এবং কোথায় যাচ্ছে এ বিষয়ে গাড়ির ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলে তারা জানান হাসান ও মোমিন নামের দুই ব্যক্তি এ পাহাড় কাটছে। জায়গার মূল মালিক এডভোকেট তালেব নামের এক ব্যক্তি।

            ড্রাইভার আরো জানান, আমাদেরকে কেরানিহাট থেকে ভাড়া করে পাহাড় কাটার জন্য নিয়ে এসেছে হাসান ও মোমিন। এ মাটি কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞেস করলে ড্রাইভার জানান ইউএনও মহোদয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

            এ বিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন পরিবেশ ও নদী রক্ষা ফাউন্ডেশনের বান্দরবান জেলার সভাপতি বাবু কর্মকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছি বান্দরবানের পরিবেশ রক্ষা করার জন্য। একটা কুচক্রী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বান্দরবান কে বিভিন্নভাবে ধ্বংস করছে। যারা পরিবেশের ক্ষতি করছে তারা দেশের শত্রু। তাই এ সমস্ত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

            জেলা সদরের ইউএনও উম্মে হাবিবা জানান, অবৈধভাবে পাহাড় কাটার জন্য আমি কোন অনুমতি দিইনি। পাহাড় কাটা দন্ডনীয় অপরাধ। যদি কোন ব্যক্তি আমার নাম বিক্রি করে মিথ্যা কথা বলে এ ধরনের কার্যকলাপ করে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

            এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোঃ: ফখরুল জানান, যারা অবৈধভাবে পাহাড় কাটছে তারা দেশ ও সমাজের শত্রু। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

            হাসান ও মোমিন নামের এ দুইজন পাহাড় খেকোর বিরুদ্ধে অসংখ্য পরিবেশ বিরোধী মামলা রয়েছে। তারা নির্বিচারে সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে পাহাড় কেটে বান্দরবানের পরিবেশে ও জীব বৈচিতত্র্ ধ্বংস করছে। সকল সচেতন মহলের পক্ষ থেকে এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

খবরটি 452 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen