আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফ্রিকার দেশ সুদানের রাজধানী খারতুমে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে আধাসামরিক বাহিনী (প্যারামিলিটারি) র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ ) সংঘর্ষে জড়িয়েছে। শনিবার (১৫ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হচ্ছে। উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে এবং লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৮০০ মানুষ।

            আধাসামরিক বাহিনীটি দাবি করেছে, তারা বিমানবন্দর ও প্রেসিডেন্ট ভবনের দখল নিয়েছে। তবে এ দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি। বেসামরিক সরকার গঠনের অংশ হিসেবে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। সেনাবাহিনী বলছে, আরএসএফ দুই বছরের মধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করা হবে। কিন্তু আরএসএফ বলছে এ একীভূত করণের প্রক্রিয়া যেন অন্তত ১০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফ একীভূত করলে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব কে দেবে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

            সুদানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাবিল আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, আরএসএফ তাদের কয়েকটি ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে সেগুলো দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেছেন, র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের সেনারা খারতুম ও সুদানের অন্যান্য অঞ্চলে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে। সংঘর্ষ চলছে এবং সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে।

            বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজধানীতে অবস্থিত সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের ওপর হামলা চালিয়েছে আরএসএফ। তাদের মধ্যে মূলত ক্ষমতার দখল নিয়ে লড়াই হচ্ছে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্স আরও জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলের মেরোই শহরেও সংঘর্ষ চলছে।

            সুদানে জাতিসংঘের মিশনের প্রধান ভলকার পার্থেস রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮৫ জন নিহত এবং আরও ১৮০০ জন আহত হয়েছে। বৈঠকের পর পার্থেস বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি খুব অস্পষ্ট। তাই লড়াইয়ের ফলে ক্ষমতার ভারসাম্য কোথায় স্থানান্তরিত হচ্ছে তা বলা খুব কঠিন।

            জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সুদানের যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে ‘অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করার’ আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, লড়াইয়ের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেলে তা ‘দেশ ও অঞ্চলের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে।

            ২০২১ সালে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ‘স্বাধীন কাউন্সিলের’ নামে দেশ চালাচ্ছিলেন। এ স্বাধীন কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। অপরদিকে স্বাধীন কাউন্সিলের প্রধান হলেন জেনারেল আব্দেল ফাতাহ আল-বুরহান।

খবরটি 357 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen