স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: বান্দরবান লামার রূপসী পাড়ায় করোনায় মৃত হামিদা বেগমের (৬২) শেষ বিদায়ের কাজ সম্পন্ন করল কোয়ান্টাম। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাতে হামিদা বেগম কক্সবাজার সদর হাসপাতালে হৃদরোগ জনিত জটিলতা ও করোনা আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোয়ান্টামকে দাফনের কাজ সম্পন্ন করার জন্যে আহ্বান জানান লামা উপজেলা কর্মকর্তা। পরদিন ভোরবেলা বৃষ্টি উপেক্ষা করে মৃতের নিজ গ্রাম অপিপোস্ট পাড়ায় কোয়ান্টামের নারী দাফন স্বেচ্ছাসেবী দল পৌঁছে যান এবং শেষ বিদায়ের গোসল ও কাফনের কাজ সম্পন্ন করেন। পূর্ণ ধর্মীয় মর্যাদায় জানাজা ও দাফনের কাজ সম্পন্ন করেন কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা দাফনের পুরুষ দল। লামার রূপসী পাড়া ইউনিয়নে এর আগে কোয়ান্টাম দাফন স্বেচ্ছাসেবী দল করোনায় মৃত দুজনের দাফন ও সৎকারের কাজ সম্পন্ন করেন।
দাফন কার্যক্রমের নারী সদস্যদের একজন মাসুদা আক্তার তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, একবছর আগে যখন এই সেবাকাজে যোগ দেই তখন মৃতের কাছে নিকট আত্মীয়রা ভয়ে আসত না। কিন্তু আমি মনে করি, একজন মানুষের শেষ বিদায় অবশ্যই সম্মানজনক হওয়া উচিত। তাই যখন আমি কোন মহিলার শেষ বিদায়ের গোসল ও কাফনের কাজটি করি তখন মমতার অনুভূতি নিয়ে করি। তাই কাজটি আমি নির্ভয়ের সাথে করে যাচ্ছি এবং আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছি।
লামা কোয়ান্টামের দাফন কার্যক্রমের প্রধান পারভেজ মাসুদ বলেন, হাসপাতাল বা বাসা যেখানে কেউ করোনায় মারা যান না কেন, আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বধর্মীয় মর্যাদায় দাফন বা সৎকারের কাজটি সম্পন্ন করি। এই সেবা দেয়ার জন্যে আমাদের পুরুষ ও মহিলা আলাদা টিম ২৪ ঘণ্টাই প্রস্তুত আছেন।
করোনায় মৃতদেহ দাফন বা সৎকারে সক্রিয় রয়েছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবী। রাজধানীসহ সারা দেশে মমতার পরশে অন্তিম বিদায়ে চলছে তাদের নিরলস মানবিক এ সেবা কার্যক্রম। ২০২০ সালে করোনার শুরু থেকে গত ২৫ জুলাই পর্যন্ত ৪ হাজার ৮৫৯ টি মরদেহের স্ব স্ব ধর্মীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা।