ব্রেকিং নিউজ:

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে স্মরণকালের ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে আশঙ্কার করা হচ্ছে। মিয়ানমারে গত কয়েক দশকের মধ্যে আঘাত হানা অন্যতম বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। মিয়ানমারের এ মানবিক বিপর্যয়ে সহায়তা করতে ইতোমধ্যে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশ জরুরি ভিত্তিতে, খাবার, ওষুধ ও উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করেছে। মিয়ানমারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী দল পৌঁছাতে শুরু করেছে এ বিষয়ে রেড ক্রস জানিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা আহতদের উদ্ধারের পর প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং কম্বল, ত্রিপল ও অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ করছে।

            মিয়ানমারে ভয়াবহ মানবিক সংকট: আর আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রস বলেছে, সাত দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। দেশটিতে প্রতি ঘণ্টায় সহায়তার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মিয়ানমারের ভয়াবহ পরিস্থিতির বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আঞ্চলিক পরিচালক আলেকজান্ডার ম্যাথিউ এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি কেবল বিপর্যয় নয়। এটি জটিল মানবিক সংকট। এ বিপর্যয়ের মাত্রা ব্যাপক এবং জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। দারিদ্র্য কবলিত দেশটি প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ মোকাবিলায় রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সামরিক সরকারের প্রধান মিন অং হ্লেইং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তার অনুরোধ করেছেন। রেড ক্রস মিয়ানমার বলেছে, ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ব্যাপক এবং মানবিক সহায়তার চাহিদা প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের প্রায় এক লাখ মানুষকে জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ ও প্রাথমিক পুনরুদ্ধারের সহায়তার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি ভিত্তিতে ১১৩ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা চেয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস।

            কয়েক দশকের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রতিবেশী মিয়ানমারে প্রাণহানির সংখ্যা ২ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের নিচে এখনও শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ভূমিকম্পে দেশটিতে সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হওয়া এলাকায় কাজ করছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে মানুষের আশ্রয়, খাদ্য ও পানি জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ চলায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের কাছে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং বলেছেন, ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ২ হাজার ৭১৯ জনে পৌঁছেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে এ আশঙ্কার করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, ভূমিকম্পে ৪ হাজার ৫২১ জন আহত হয়েছেন এবং নিখোঁজ আছেন আরও ৪৪১ জন।

            গত শুক্রবার দুপুরের দিকে মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পড আঘাত হানে। দেশটিতে এক শতাব্দির বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত বছরের প্রাচীন গির্জা ও আধুনিক ভবন ধসে যায়। ভূমিকম্পে মিয়ানমারের প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেশটির রাজধানী ব্যাংককে ধসে পড়া আকাশচুম্বী একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া কয়েক ডজন মানুষকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্ধারকারীরা বলেছেন, উদ্ধার কাজ জটিল হওয়ায় চাপা পড়া লোকজনকে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে।

সূত্র: রয়টার্স।

খবরটি 55 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন