বিশেষ খবর ডেস্ক: রাজধানী ঢাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির ৮ ম বৈঠক অনুষ্ঠিত। রবিবার (২০ ‍আগষ্ট) জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী তিন পার্বত্য জেলার সরকারি দপ্তরসমূহ পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরের কাজ সফলভাবে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা পরিষদে যথাক্রমে ৩০, ২৯ ও ২৮টি বিভাগ ও দপ্তর হস্তান্তরিত করা হয়েছে। পার্বত্যবাসী সরকারি সেবা কার্যক্রমে সুফল পাচ্ছে।

            এ সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির কার্যক্রম গতিশীল ও ফলপ্রসু করতে একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ জনবল কাঠামো বাস্তবায়ন ও পার্বত্য অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলের সেনাবাহিনীর প্রত্যাহারকৃত ২৪০ টি ক্যাম্পে পর্যায়ক্রমে ৩০ টি ক্যাম্পে পুলিশ মোতায়েন বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিধিমালা-২০১৯ দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রণয়নের লক্ষ্যে শিগগির ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করা হবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় বিগত সভার গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা, পর্যটন শিল্প ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিতে সভায় ঐকমত্য পোষণ করা হয়। পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। সভায় পার্বত্য অঞ্চলকে নিরাপদ, সুখী, উন্নত, শান্তি ও সমৃদ্ধির জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে শান্তিচুক্তির শর্তসমূহ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করেন।

            এবার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির বৈঠকে বান্দরবান পার্বত্য জেরার অতি সম্প্রতি কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র সংঘাট বিষয়টি আলোচনায় স্থান পেয়েছে। কেএনএফ পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অজুহাতে পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে। কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসী সংগঠন ও জঙ্গি সৃষ্টি করছে সভায় উল্লেখ করা হয়। কেএনএফ কোন রাজনৈতিক দল নয়, এ সমস্যার রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার প্রয়োজন হবে না। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টক (কেএনএফ) সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে শক্তি প্রয়োগে দমনে সুপারিশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি। এ সময় কেএনএফ বিরুদ্ধে তড়িত ব্যবস্থা নিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

            কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে নাথান বম প্রতিষ্ঠিত কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ৯ টি উপজেলা নিয়ে বম জনগোষ্ঠীর জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে আত্নপ্রকাশ করে। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি নিষিদ্ধ জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠন। গত কয়েক বছরে তারা বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে সেনা সদস্যসহ বেশ কয়েক জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। কেএনএফ বিরুদ্ধে যে কোন মূল্যে দ্রুত নির্মূলের ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

            এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপি। এ সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা এমপি, বাসন্তী চাকমা এমপি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য গৌতম কুমার চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

খবরটি 361 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen