অর্থনীতি ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাতের আম ‘মিয়াজাকি’। যার প্রতি কেজির দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ টাকার (ভারতীয় প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার রুপি) বেশি। ভারতে তিন দিন ব্যাপী আয়োজিত এক আম উৎসবে মিয়াজাকি আম প্রদর্শন করা হচ্ছে। শনিবার দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। জাপানের একটি শহরের নাম অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাতের এ আম চাষ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কৃষকরা। বিশ্বে প্রথম বারের মতো দামি জাতের এ আমটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় উৎপাদন করা হয়েছিল। ১৯৮০ দশকে জাপানের মিয়াজাকিতে আনার পর এ আমের উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।

            জাপানে ‘সূর্যের ডিম’ এবং ভারতে ‘লাল সূর্য’ নামে পরিচিত এ আমের গাছে মুকুল আসার পরপর তা বেগুনি রঙ ধারণ করে। জাপানে মিয়াজাকির চারা অত্যন্ত সাবধানতার সাথে রোপণ করা হয়। গাছে আসা প্রতিটি ফলের আলাদা যত্ন নেওয়া হয়। আর পরিপক্ক হওয়ার সময় এর রঙ হয়ে যায় উজ্জ্বল লাল। ডাল থেকে ছিঁড়ে ফেলার পরিবর্তে প্রাকৃতিকভাবে পড়ে যাওয়া পর্যন্ত এ আমের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফলটি পড়ে যাওয়ার পর যাতে সেটিতে কোনও ধরনের আঘাত না লাগে সে ব্যবস্থা কৃষকরা আগে থেকেই করে রাখেন। অত্যন্ত মসৃণ এবং মিষ্টি এ আমে তন্তুযুক্ত উপাদান থাকে অনেক কম। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে এ আমের চাষাবাদ শুরু হয়েছিল স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে। তিনি প্রথমে সেখানকার একটি মসজিদের পাশে মিয়াজাকির একটি বীজ রোপণ করেছিলেন। এরপর মসজিদ কর্তৃপক্ষ ফলটি নিলামে তুলে বিক্রি করে। আম বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থ মসজিদের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় খামারে এ আমের চাষাবাদ হয়।

            পশ্চিম বঙ্গের মিয়াজাকি চাষী শওকত হুসেইন বলেন, প্রথম বারের মতো আম উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এ কৃষক মিয়াজাকির চারা বাংলাদেশ থেকে এনে চাষাবাদ শুরু করেছিলেন বলে জানান। তার বাগানে এ আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। একই সঙ্গে মানুষের কাছ থেকে প্রচুর ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের যে কোন এলাকায় মিয়াজাকি চাষ করা যেতে পারে। আমটি কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে। আম উৎসবের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেছেন, এবারের উৎসবে ২৬২ টির বেশি জাতের আমের প্রদর্শনী হচ্ছে। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ মিয়াজাকি। তিনি বলেন, প্রদর্শনীতে মিয়াজাকি আমের স্টলে প্রচুর মানুষ ভিড় করছেন এবং আমরা তাদের কাছ থেকে এ আমের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন পেয়েছি। এ ধরনের উৎসবের মাধ্যমে পর্যটনের প্রসার ঘটাতে চান তারা।

            রাজ বসু বলেন, বাংলাদেশ-দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (ডিএইচআর) করিডোরের সোমপুর-পাহাড়পুর-মহাবিহারকে যাতে শিগগিরই ‘আম হেরিটেজ করিডোর’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়, সেজন্য ইউনেস্কোর কাছে আবেদন করেছেন তারা।

খবরটি 424 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen