স্বাস্থ্য ডেস্ক: জাতীয় ফল কাঁঠাল সবার প্রিয়। চলছে কাঁঠালের মৌসুম। বাজারে এখন কাঁঠাল সহজলভ্য। কাঁঠালে আছে নানা শারীরিক উপকারিতা। তবে জানেন কি, শুধু কাঁঠালে নয় এর বীজে আছে নানা পুস্টিগুণ। যা ভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেবে। অল্পখরচে শরীরে পুষ্টি চাহিদা মেটাতে এ সময় কাঁঠালের বীজ রাখতে পারে পাতে। প্রোটিন থেকে শুরু করে এতে আছে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন ফসফরাস ও ফাইবার। জেনে নিন কাঁঠাল বীজ খেলে সারবে যেসব রোগ ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম পটাসিয়ামসহ বিভিন্ন গুণাগুণে ভরা কাঁঠালের জুড়ি মেলা ভার। শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী এ ফল খেতে অনেকে ভালবাসে। খাওয়ার পর বীজ ফেলে দেন। কিন্তু এমন না করা ভাল। কারণ উপকারিতার মাপকাঠিতে মোটে কম যায় না কাঁঠালের বীজ। নিচে কাঁঠাল বীজের গুণাগুণ দেওয়া হল।
হজম শক্তি বাড়ায়: কাঁঠালের বীজের আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায়। সে সঙ্গে নিয়মিত মলত্যাগের সাহায্য করে।
হার্ট ভাল রাখে: কাঁঠালের বীজে আছে পটাশিয়াম যা ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে। সে সঙ্গে হৃৎপিণ্ড ভাল রাখে৷ হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমায়।
হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে: স্বাস্থ্যকর হাড়ের জন্য ক্যালসিয়াম ছাড়া অন্যান্য পুষ্টির প্রয়োজন। ম্যাগনেসিয়াম তাদের মধ্যে একটি। কাঁঠালের বীজে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে এবং হাড় মজবুত করে।
মেটাবলিজম বাড়ায়: কাঁঠালের বীজে কার্বোহাইড্রেট থাকায় এটি শক্তি বাড়ায়। এগুলোতে বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন রয়েছে, যা খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে এবং স্বাস্থ্যকর বিপাককে সমর্থন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে: মেয়েদের মধ্যে অনেকে অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত। কাঁঠালের বীজে আয়রন আছে। আয়রন দেহে লোহিত কনিকার মাত্রা বাড়ায়।
হজমশক্তি বাড়ায়: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে বিপাক ক্রিয়া বাড়ায় কাঁঠাল বীজ। প্রচুর ফাইবার থাকে এতে। যা ডায়রিয়া নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। বদহজমে সহজ হোমমেড রেমেডি হতে পারে এ পাউডার।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: কাঁঠাল বীজে প্রচুর ভিটামিন এ আছে। যা চোখের জন্য খুব জরুরি। যারা চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন। তারা চোখের যত্নে কাঁঠাল নিয়মিত খেতে পারেন। এটি নাইট ব্লাইন্ডনেস কাটাতে সাহায্য করে।
যৌন চিকিৎসায়: যুগ যুগ ধরে নানা ধরনের যৌনব্যাধিতে কাঁঠালের বীজের ব্যবহার হয়ে আসছে। এশিয়ার অনেক দেশে প্রচলিত চিকিৎসার একটি অন্যতম উপকরণ এটি। কাঁঠালে থাকা আয়রন এ কাজে সহায়ক।
পেশী গঠন: উচ্চমানের প্রোটিন সমৃদ্ধ কোলেস্টেরলবিহীন বীজটি ডায়েট চার্টে থাকলে তৈরি হবে পেশীবহুল শরীর। মিলবে ক্যালরি। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাদের জন্য কাঁঠাল বীজ হতে পারে অনেক উপকারী এক খাবার।
বলিরেখা দূর করে: বয়সের ছাপ দূর করতে কাঁঠালের বীজে আছে জাদুকরি গুণ। কাঁঠালের বীজের গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ফেসপ্যাক দুই সপ্তাহ পরপর মুখে লাগালে অসময়ে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করবে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ফ্রি র্সাডিক্যাল দূর করে। এতে ত্বকের সতেজতা বাড়ে।
চুলের যত্নে: কাঁঠালের বীজে থাকা ভিটামিন এ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে এ ভিটামিন। এ জন্য খাবারের তালিকায় কাঁঠালের বীজ রাখুন। এতে থাকা প্রোটিন ও আয়রন চুলের জন্য টনিকের কাজ করে।
রক্ত স্বল্পতায়: রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় কাঁঠালের বীজে থাকায় আয়রন। যা অ্যানিমিয়া তথা রক্তাল্পতা সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবিলা করে।
ত্বকের রোগ সারায়: এটি ত্বকের নানা রোগ সারায়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ও স্বাস্থ্যকর চুল পেতে নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খেতে পারেন। কাঁঠালের বীজ আপনার ত্বককে করে তুলবে সজীব ও তরতাজা। দু-একটি বীজ সামান্য দুধ ও মধুতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে, সেটা দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। সে পেস্ট সারা মুখে লাগিয়ে শুকাতে দিন। তারপর উষ্ণ গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
মানসিক চাপ কমায়: মানসিক চাপ কমাতে কাঁঠালের বীজ খুব উপকারী। কাঁঠালের বীজ প্রোটিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসে ঠাসা। যা মস্তিষ্কের ক্যামিকেলের ভারসাম্য বজায় রেখে শরীর মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
সংক্রমণ রোধে: বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বাড়ে। এ বীজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অনেকের হয়তো জানা নেই, কাঁঠাল বীজ বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে। নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খেলে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন।
মস্তিষ্ক ও হার্টের সুস্থতায়: প্রতিদিনের খাবারে কাঁঠালের বীজ রাখলে আপনার শরীরের আয়রনের মাত্রা বাড়বে। এ বীজে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। কাঁঠালের বীজ হিমোগ্লোবিনের একটি উপাদান। আয়রন সুস্থ রাখবে আপনার মস্তিষ্ক ও হার্ট।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
