আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে শান্তি রক্ষা মিশন আর না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদ। শুক্রবার পরিষদের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মালিতে শান্তি রক্ষা বাহিনীর যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে সব সদস্য ও কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। নিরাপত্তা পরিষদের অবশ্য এ সিদ্ধান্তে আসা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। মালিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার সম্প্রতি অনেকটা আকস্মিকভাবে  জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর কমান্ডকে দেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ১৩ হাজার কর্মকর্তা ও সেনাসদস্য ‘মিনউসমা’ নামের একটি মিশনে কর্মরত ছিলেন। এ মিশনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ জনগণকে বিদ্রোহী ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো থেকে নিরাপত্তা দেওয়া। আকস্মিকভাবে জাতিসংঘের বাহিনী বিদায় নিলে দেশটির সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে এ আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের একাংশ।

            মালির সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্র ও সামরিক উপকরণ যথেষ্ট পরিমাণে নেই। ২০২১ সালে রাশিয়া ভিত্তিক বেসরকারি যোদ্ধা কোম্পানি পিএনসি ওয়াগনারের সঙ্গে চুক্তি করে দেশটির সরকার। সে থেকে ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় ১ হাজার যোদ্ধা মালির কেন্দ্রীয় ও উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। এ দুই অঞ্চলে ইসলামিই ইসলামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বেশি।

            বৈঠকে জাতিসংঘের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি বলেন, শান্তি রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরে যেতে বলা আসলে মালির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের সঙ্গে পিএনসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের ‘ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের’ ফলাফল।

            পৃথক এক বিবৃতেতে জাতিসংঘের মার্কিন দূতের এ বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে হোয়াইট হাউস বলেছে, ২০২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ওয়াগনার গ্রুপকে ২০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ প্রদান করেছেন মালির ক্ষমতাসীন জান্তা। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জন কিরবি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মালি থেকে জাতিসংঘ বাহিনীকে বিদায় দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রিগোজিন যে কলকাঠি নেড়েছেন অনেকে জানে না। কিন্তু আমরা জানি যে মালির জেষ্ঠ্য সামরিক কর্মকর্তারা এখন ওয়াগনারের নির্দেশেই চলছে।

            রাশিয়ার জাতিসংঘ বিষয়ক উপরাষ্ট্রদূত আনা ইভেস্তিগনেভা অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেছেন, মালি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা পুরোপুরি তার সার্বভৌম এক্তিয়ার থেকে নিয়েছে। আমাদের উচিত মালির ক্ষমতাসীনদের আত্মবিশ্বাসকে প্রশংসা করা এবং দেশটিতে স্থিতিশীলতা আনতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা।

খবরটি 422 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen