জাতীয় ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) রাত থেকে আসিফ নিখোঁজ রয়েছেন। রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে তার স্ত্রী মেহেরুন্নিছা নিখোঁজ বিষয়ে জানিয়েছেন। এদিকে, গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন আসিফের শ্যালক ও তার নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক শাফায়েত হোসেন (৩৮)। এছাড়া ২৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে আসিফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুসা মিয়াকে (৮০) একটি মারামারির মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

            আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মূলত উপনির্বাচন ঘিরে সর্বত্র আলোচনা চলছে বিএনপি দলছুট নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তারকে নিয়ে। তিনি এ আসন থেকে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। দলের সিদ্ধান্তে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। পরবর্তীতে নিজের ছেড়ে দেওয়া আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম কেনায় তাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। আব্দুস সাত্তার ছাড়া আরও তিনজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাষানী, জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। রাজনীতি বিশ্লেষকরা আসিফকে সাত্তারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসিফ ভোটের প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন জানা গেছে।

            আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা অভিযোগ করে জানান, দুই দিন ধরে তার স্বামীর খোঁজ মিলছে না। আসিফের মুঠোফোনটি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া পুলিশ বাড়িতে এসে নানাভাবে হয়রানি করছে।

            এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশ তার (আবু আসিফ) বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করেনি। পুলিশ কখনো তার বাড়িতে যায়নি। তিনি নিখোঁজ কি না সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এমনকি আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

            নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফের নিখোঁজের ঘটনা ইসির নজরে এসেছে। নিখোঁজ এ প্রার্থীর সন্ধান ও সত্য উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন ইসি রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন প্রার্থীর নিখোঁজের সংবাদ দেখেছি। এটি নিয়ে আমরা সাথে ব্যবস্থা নিয়েছি। আসলে কী ঘটেছে সেটি জানার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডিসি, এসপি ও নির্বাচন কর্মকর্তার নিকট চিঠি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান তিনি।

            আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে লড়তে ১৩ প্রার্থীর মধ্যে আটজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে চারজন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন, শিক্ষকনেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম ওরফে সাজু এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা। এ চার হেভিওয়েট প্রার্থীর সরে দাঁড়ানোর ফলে সাত্তারের জয়ের পথ অনেকটা সুগম হয়।

খবরটি 362 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen