বিশেষ খবর ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। এ জন্য এফবিআইয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুদকের কর্মকর্তাদের যৌথ তদন্ত দল গঠন করা হবে। এই টিম পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে। দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা গেলে পাচার করা অর্থফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় সাফল্য আসতে পারে। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পাচার করা এসব অর্থ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে যায়। গত ২ মে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি ডলার পাচারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

            দুদক সূত্র জানায়, এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ তদন্তের অংশ হিসেবে গত ১৯ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। হোটেল র‌্যাডিসনে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় দুদকের সহকারী পরিচালক ও মহাপরিচালক পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা এতে অংশ নেন। ‘প্রটেক্টিং পাবলিক ইন্টিগ্রিটি : ইনভেস্টিগেটিং এ্যান্ড প্রসিকিউটিং কমপ্লেক্স করাপশন কেস’ শিরোনামের এই কর্মশালায় এফবিআইয়ের রেসিডেন্ট লিগ্যাল এ্যাডভাইজার সারাহ এডওয়ার্ড, এফবিআইয়ের সুপারভাইজরি স্পেশাল এজেন্ট জন পেই, স্পেশাল এজেন্ট শ্যানন বেইনিক, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের ফ্রড সেকশনের প্রিন্সিপাল এ্যাসিস্ট্যান্ট ডেপুটি চীফ মার্ক সিপোলেট্টি, ক্রিমিনাল ডিভিশনের ইন্টারন্যাশন এ্যাফেয়ার্স অফিসার টেরি এটন ও ফ্রিড শেফিল্ডসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা অংশ নেন। তদন্ত ও অনুসন্ধান কাজে কমপ্লেক্স করাপশন কেসের ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এই কর্মশালার আয়োজন করেছিল। মূলত মানি লন্ডারিং মামলাগুলোর ক্ষেত্রে কিভাবে তদন্ত বা অনুসন্ধান পর্যায়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা যায়- সে সব কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

            কর্মশালায় অংশ নেয়া এক দুদক কর্মকর্তা জানান, এফবিআইয়ের কর্মকর্তারা বিদেশে অর্থ পাচারের মামলাগুলো এফবিআইয়ের সঙ্গে জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করে। বিশেষ করে যে সব বাংলাদেশী নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবৈধভাবে অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে এফবিআই সহযোগিতা করতে পারবে। একই সঙ্গে সে সব অর্থ ফ্রিজ করে তথ্য পাঠানোর পাশাপাশি ফেরত পাঠাতেও সহযোগিতা করতে পারবে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে কানাডায়। এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ তদন্ত করতে পারলে কানাডায় যারা অবৈধভাবে অর্থ পাচার করেছেন, তাদের অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। এ ছাড়া কানাডার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশেও পাচার করা অর্থের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। এফবিআই এজেন্টরা যেহেতু পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করে থাকে, তাদের পক্ষে যে কোন দেশেই পাচার করা অর্থের বিষয়ে তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে।

খবরটি 364 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen