অর্থনীতি ডেস্ক: দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে, সরবরাহও স্বাভাবিক। তাই রমজানে ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছেন এসব পণ্যের উৎপাদক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। আজ শনিবার এফবিসিসিআই আয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ক মতবিনিময়সভায় এ আশ্বাস দেন তারা। এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ সদস্যবিশিষ্ট বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৪৬টি পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কি না তা তদারক করবেন কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর, সরবরাহ পরিস্থিতি, উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বাজারদর সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন করবেন এই কমিটির সদস্যরা। মতবিনিময় সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান করেন।

            বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব আছে মন্তব্য করেন সভাপতি। এ সময় তিনি বলেন, সারা বিশ্বে উৎসবকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমান। বাংলাদেশেও এমন সংস্কৃতি তৈরির আহ্বান জানান মো. জসিম উদ্দিন। বিশ্ববাজারে বিভিন্ন কাঁচামাল ও পণ্যের দাম বেড়েছে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি সরকারকে কর ও শুল্কহার সমন্বয়ের দাবি জানান। তিনি বলেন, যেহেতু পণ্যের দাম ও শিপিং খরচ বেড়েছে, তাই শুল্ক ও করহার কমালেও সরকারের রাজস্বের ঘাটতি কমবে না বরং সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যাবে।

            এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, কভিড ও রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম ও জাহাজ ভাড়া প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দেশের উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আমদানীকৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের প্রাপ্ত ঋণসীমা উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যমান চলতি মূলধন ঋণসীমা অন্তত ৪০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে এফবিসিসিআই চিঠি দিয়েছে বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। একই সঙ্গে আগামী ৩০ জুন, ২০২২ পর্যন্ত ঋণ খেলাপি না করার আহ্বান জানান তিনি।

            মতবিনিময়সভায় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বশির উদ্দিন জানান, সরবরাহ ঠিক থাকলে বাজারে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে। একই আশ্বাস দেন বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।

            বাংলাদেশ অয়েল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, সেলস অর্ডারের ১৫ দিনের মধ্যে তেল সরবরাহ করতে হয়। তাই মিল মালিকদের তেল মজুদ করে রাখার কোনো সুযোগ নেই।

            টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার তাসলিম বলেন, গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর বাজার কারসাজির কারণে গোটা ব্যবসায়ী সমাজকে দায় নিতে হচ্ছে। তবে রমজানে বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। মিল মালিকদের কাছে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে এবং বাজারেও কোনো সরবরাহ ঘাটতি হবে না।

            এ সময় ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান অভিযোগ করেন, উৎপাদক পর্যায়ে কোনো সরবরাহ ঘাটতি না থাকলেও খুচরা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ চাঁদাবাজি। এ সময় তিনি ভোক্তাদের প্যানিক বায়িং না করার জন্য আহ্বান জানান।

            মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সাবেক সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, পরিচালক রেজাউল করিম রেজনু, হারুন অর রশীদ, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, এম জি আর নাসির মজুমদার, তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটো, আবু হোসাইন ভুঁইয়া রানু, ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, ড. জোশদা জীবন দেবনাথ, সিআইপি, তাহমিন আহমেদ, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল ও মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

খবরটি 418 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen