অর্থনীতি ডেস্ক: পাশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর স্প্যান বসানোর জন্য গত সপ্তাহে ৩৯ মেট্রিক টন পাইলিং পাইপ সরবরাহ করেছে ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রডাক্টস লিমিটেড। আর এই পণ্য সরবরাহের মধ্য দিয়ে এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বহুল আকাঙ্ক্ষিত বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হলো। একইভাবে প্রথম উৎপাদিত কারখানা হিসেবে ইতিহাসের অংশও হয়ে গেল ম্যাকডোনাল্ড স্টিল। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোনাল্ড স্টিলের মালিকানাধীন কারখানাটি গত ২৫ জানুয়ারি পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। দুই মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর জন্য গত ২৩ মার্চ পাইলিং পাইপ সরবরাহ করে। এদিন ৩৯.১৯ মেট্রিক টন ওজনের চার ফুট ব্যাসের ৩২টি পাইপ সরবরাহ করা হয়।

            সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ৪ এপ্রিল আরো ২০ মেট্রিক টন পাইপ সরবরাহ করা হবে। এভাবে মোট ৩০০ মেট্রিক টন পাইলিং পাইপ যাবে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর জন্য, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আগামী জুন মাসে একই সেতুর জন্য ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার টন ওজনের একটি স্প্যান বানানোর কাজ শুরু হবে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে অবস্থিত ম্যাকডোনাল্ডের কারখানায়।

            প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রেলওয়ে সেতুর জন্য মোট ৩৭টি স্প্যান তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৬টি স্প্যান তৈরি হচ্ছে ভিয়েতনাম ও মিয়ানমারে। একটি স্প্যান তৈরির অর্ডার পেয়েছি আমরা। যদি সফলভাবে এটি তৈরি করে স্থাপন করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন বড় বড় সেতুর স্প্যান দেশেই তৈরি করা যাবে। এতে সরকারের অর্থ ও সময় যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনি দেশীয় শিল্পের বিকাশও হবে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমরাই প্রথম পণ্য উৎপাদন শুরু করেছি এবং সেটা সফলভাবে সরবরাহ করেছি।  তিনি বলেন, ইস্পাত অবকাঠামোর ভবন নির্মাণের সব উপাদান তৈরি হবে এই কারখানায়। কাঁচামাল প্লেট ও কয়েল আসবে জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান ও চীন থেকে। দেশে ঢাকা মেট্রো রেল, বিদ্যুৎকেন্দ্র, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণসহ সাম্প্রতিক সময়ে বড় সব প্রকল্পেই এই ইস্পাতের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

            বেজা সূত্র জানায়, মাত্র ৫৫০ একর জমি নিয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার সমুদ্রতীরবর্তী উপকূলের পতিত জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার স্বপ্ন আজ প্রসারিত হয়েছে ৩১ হাজার একর জমিজুড়ে। দ্বিতীয় ধাপে এই শিল্পনগরের সঙ্গে যোগ হবে সন্দ্বীপ ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের আরো ১৮ হাজার একর। তখন এটি এশিয়ার সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হবে। ২০৩০ সাল নাগাদ শিল্পাঞ্চলটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে এখানে।

            বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, এই মুহূর্তে ১৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কার্যক্রম চলমান। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে।

খবরটি 371 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen