বিশেষ খবর ডেস্ক: দুই দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার কথা বললেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে ঢাকা ও দিল্লির দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে বৈঠক করেন শ্রিংলা। বৈঠক শেষে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথা জানিয়েছেন দুই পররাষ্ট্রসচিব। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী, দুই দেশে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এবং বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ লক্ষ্যে আগামী ১৫-১৭ ডিসেম্বর সফর করবেন তিনি। রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের সফর চূড়ান্ত করতে এবং দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে আলোচনার জন্য গতকাল সকালে বিশেষ বিমানে ঢাকায় আসেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠক ছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আজ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

দুই পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক শেষে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আলোচনা করেছি এবং দেখেছি আমাদের মধ্যে বড় কোনো মতবিরোধ নেই। বাংলাদেশে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। ডিসেম্বর মাস বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ১৬ ডিসেম্বর উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশে আসবেন। দেশের সম্পর্ক ভালোভাবে যাচ্ছে। দুই দেশের একসঙ্গে উদযাপন বিরল। বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণ ১৯৭১ সালে জীবন উত্সর্গ করেছিল। স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছিল। আপনাদের বিজয় দিবসের অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় এসেছিলেন। সেটি ছিল কোভিডের সময় তার প্রথম বিদেশ সফর। এতে সম্পর্কের তাত্পর্য প্রতিফলিত হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি। দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে বড় কোনো বাধা নেই। কীভাবে সামনের দিনগুলোতে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কর্মসংস্থানে কাজে আসবে এমন বিষয় বিশেষ করে গ্রিন এনার্জি, ডিজিটাল খাতসহ অন্যান্য বিষয়ে আমরা সহযোগিতা আরও বাড়াতে পারি। কানেক্টিভিটি নিয়ে এরই মধ্যে অনেক ভালো সহযোগিতা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভারতের সঙ্গে পুরনো ছয়টি রেল কানেক্টিভিটির মধ্যে পাঁচটি পুনঃস্হাপন করা হয়েছে এবং আরেকটি সামনের বছর হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য দিল্লি সফর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শ্রিংলা বলেন, গত মার্চে ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এটি এখনো বহাল। দুই দেশের মধ্যে এ সফর সুবিধাজনক কোন সময়ে করা যায়, তা নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশেষ করে অমিক্রনের কারণে উদ্বেগ আছে। তবে যত শিগগির সম্ভব তিনি ভারত সফর করুন, আমরা এটা চাই। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুই দেশের ৫০ বছরের সম্পর্কের ভিত্তিতে আগামী দিনগুলোতে কীভাবে আরো সম্পর্কোন্নয়ন করা যায় তা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

কোভিড পরিস্থিতি যৌথভাবে মোকাবিলার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনোই নিরাপদ থাকবে না, যদি ভারত নিরাপদ না থাকে এবং একই কথা ভারতের জন্যও প্রযোজ্য। ভারতের সঙ্গে বহুমাত্রিক ইস্যু রয়েছে এবং ঝুলে থাকা ইস্যুগুলো কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী গত মার্চে ঢাকা সফর করেছেন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতিও এ মাসেই ঢাকা সফর করবেন। এটি একটি ‘রেকর্ড’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোমবার বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস যৌথভাবে পালন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন স্বর্ণযুগ চলছে। কোভিড পরিস্থিতি যৌথভাবে মোকাবিলার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনোই নিরাপদ থাকবে না, যদি ভারত নিরাপদ না থাকে এবং একই কথা ভারতের জন্যও প্রযোজ্য। ভারতের সঙ্গে বহুমাত্রিক ইস্যু রয়েছে এবং ঝুলে থাকা ইস্যুগুলো কীভাবে দ্রুত সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী গত মার্চে ঢাকা সফর করেছেন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতিও এ মাসেই ঢাকা সফর করবেন। এটি একটি ‘রেকর্ড’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোমবার বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস যৌথভাবে পালন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন স্বর্ণযুগ চলছে। সামনের দিনগুলোতে কানেক্টিভিটি, গ্রিন এনার্জি, টেকনোলজিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে কীভাবে অগ্রসর হতে পারি সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ সীমান্ত কীভাবে করা যায় এবং বাণিজ্য কীভাবে বাড়ানো যায় সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সৌজন্য সাক্ষাৎ করার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেন বলেছেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত আরো বেশি সতর্ক হবে, এ বিষয়ে একটি ফর্মুলাও তারা বের করেছে। তিনি বলেন, সীমান্ত বিষয়ে তারা নিজেরাই বলেছে এ বিষয়ে তারা সতর্ক দৃষ্টি রাখবে। তারা একটি ফর্মুলা দিয়েছে। যাতে করে ঝামেলা না হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ভারত সরকার ১৯৭১ সালে স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে। এ বছর তাদের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের ফলে আমরা আবারও সম্মানিত হলাম।

খবরটি 421 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen