অর্থনীতি ডেস্ক: এবারো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে চলতি অর্থবছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা আদায়ের টার্গেট নিয়েছে সরকার। এই অর্থ বাজেট ঘাটতি মেটানোসহ সরকারের দৈনন্দিন কিছু ব্যয় মেটানোর কাজে ব্যবহার করা হবে। ‘স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০১৯’ আওতায় বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এই অর্থ বিগত দুই অর্থবছরে থেকে এই সব প্রতিষ্ঠানে থাকা ‘অলস’ অর্থ নিয়ে আসা হচ্ছে। এর আগে দুই অর্থছরে বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে ৩১ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ সরকারি কোষাগারে নিয়ে আসা হয়েছিল।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বরাবরের মতো এবারো চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি কোষাগারে সবচেয়ে বেশি অর্থ নিয়ে আসা হবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছ থেকে। এই প্রতিষ্ঠানের জন্য টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর কারণ কম দামে তেল কিনে বেশি দামে অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি করার কারণে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪-১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। গত অর্থবছরে বিপিসি তেল বিক্রি করে ৫ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা এবং এর আগের অর্থবছরে ৫ হাজার ৬৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। জানা গেছে, এর আগের দুই অর্থবছরে বিপিসির কাছ থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা করে মোট ১০ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মংলা পোর্ট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইপিবি কাছ থেকে অর্থ নিয়ে আসা হবে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পেট্রোবাংলা, পল্লী বিদ্যুতের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালের মে মাসে এক প্রতিবেদন উল্লেখ করে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থার তহবিল তাদের নিজস্ব আইন ও বিধি দিয়ে পরিচালিত হয়। এসব সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটানোর পরও তাদের তহবিলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উদ্বৃত্ত থাকে। ২০১৯ সালের হিসাবে স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষ ২৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি টাকা ছিল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কাছে ২১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলার কাছে ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কাছে ১৩ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অলস অর্থ ৯ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে অলস অর্থ পড়ে ছিল ৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিমাণ ৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা। বিসিআইসির কাছে ছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। সার, কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের আছে ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা। জাতীয় বিশবিদ্যালয়ের অব্যবহৃত অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের দুই হাজার ৮০ কোটি টাকা অলস পড়ে ছিল।

খবরটি 464 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen