পর্যটন ডেস্ক: বান্দরবানের তাজিংডং সৌন্দর্য্য উপভোগে ভ্রমন। ভ্রমন নামটাই আনন্দ। ইট পাথরের শহর থেকে সবুজ গাছে ঘেরা পাহাড়ের সৌন্দর্য্য কাছ থেকে দেখার লোভ সামলানো দূরূহ বৈকি। অরন্য ঘেরা পাহাড় তাজিংডং দেখতে মনোরম সৌন্দর্য্য। স্বপ্ন ঘুরপাক খাবে জয় করবো সরকার ঘোষিত সর্বোচ্চ পাহাড় তাজিংডং। বান্দরবান পাহাড়ে উঠতে বুঝতে আর বাকী নেই মেঘ নয় পাহাড়। বান্দরবানে রয়েছে ১০ ভাষায় কথা বলে ১১টি আদিবাসী জনগোষ্ঠী। এ ১১টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, চাক, খিয়াং, খুমী, পাংখোয়া ও লুসাই। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রয়েছে বর্ণাঢ্য সংস্কৃতির জীবনধারা।

            বান্দরবান বাস স্টেশন সংলগ্ন হোটেল হিল ভিউ। পাহাড়ি উচু নিচু আকাবাকা পথ দিয়ে যাওয়া উদ্দেশ্য থানছি উপজেলায় তাজিংডং দেখা। প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হতে পারে। মিলন ছড়ি পুলিশ চেকপোস্ট ওয়াইনজংশন আর্মি ক্যাম্পে দেখাতে হয়। সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পৌছা যায় চিম্বুক পাহাড়ের চুড়ায়। গাড়ি থামিয়ে চিম্বুকে চিকেন খিচুড়ি খাওয়ার সুযোগ নেয়া যায়। আদিবাসী মেয়েরা দৃষ্টিনন্দন সাজে সেজে দল বেধে ঘুড়তে দেখা যায়। প্রকৃতির উপভোগ্য সৌন্দর্য্য আর আদিবাসী পাহাড়ি মেয়েদের সাজ অন্যরকম ভালো লাগা মনে হবে এযেন এক স্বপ্ন। চিম্বুকের চুড়ায় স্থানীয় আদিবাসীরা পাহাড়ি ফলের পসরা সাজিয়ে বসে থাকে আগত দর্শনার্থীদের জন্য। পাহাড়ে ‍গাছের ছায়ায় নয়নাবিরাম দৃশ্য আর উচ্চু থেকে পাদদেশে তাকালে গা শিরশির করে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের মাধ্যে একটি চিম্বুক। চান্দের গাড়িতে আনন্দ উল্লাস স্ব-স্ব কণ্ঠে গান, এযেন অন্য রকম প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সৌন্দর্য্য অবলোকনে পাহাড়ি উচুনিচু পথ পাড়ি দিয়ে থানছি পৌছা যায়। থানছি পর্য়ন্ত গাড়ি চলে।  গন্তব্য সৌন্দর্য্য উপভোগ তাজিংডং। এখানে গেলে গাইড স্থানীয় আদিবাসী নেয়া যায়। থানছি থেকে তাজিংডং আট থেকে দশ ঘন্টা পায়ে চলা পথ। পাহাড়ি অজানা অচেনা রাস্তা তার উপর নিষিদ্ধ এলাকা। জঙ্গলতো পাহাড়ের অলংকার। প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে হাটা শুরু করতে হবে। গন্তব্য থানছি থেকে শেরকর পাড়া। একেতো হাটা তার উপর প্রখর রোদ। উপরের দিকে উঠলে এমনিতে স্নায়োচাপ বেড়ে যায়। মাথার ঘাম গড়িয়ে পায়ে। থানছি থেকে প্রায় বিশ বা একুশ কিলোমিটার ভিতর হবে। শুধু এক ফিট পায়ে চলা পথ। কোন প্রকার আধুনিকতা এমন কি বিদ্যুৎ পর্যন্ত নেই। চারদিকে পাহাড় আর বন। মঝে মাঝে পাহাড়ী ঝর্ণা দেখা যায়। মাঝে মাধ্যে ভারি বোঝা মাথায় ও ঝাকিতে করে ছোট দলে আদিবাসী নারীদের দেখা মেলে। আমাদের তুলনায় তারা অনেক পরিশ্রমি। আদিবাসী পাহাড়ি নারীদের অবয়ব অনেক কিছু বলে দেয়। গায়ের রং কালো কি সুন্দর সবাই পরিপাটি। পাহাড়িদের হাতে বোনা তাতের দুপাটি ঐতির্য়্যমণ্ডিত তার উপর পাহাড়িদের পরিধেয় এক মাত্র বস্তু। ছোট বড় আট থেকে নয়টি পাহাড় পাড়ি দিতে রীতিমতো সর্বাঙ্গে ব্যাথা অনুভব হবে। থানছি থেকে হাটার রাস্তায় ঘড়ির কাটায় ঠিক রাত আটটা। এখান থেকে নামতে হবে গাছের সিড়ি বেয়ে। এবারতো অন্ধকারে টর্চ লাইটের আলোতে নামতে হবে সেই ভেবে ভয় হতে পারে। শেরকর পাড়ার কাছা কাছি আসতে মনে হচ্ছিল মূহুর্তে পৌছা যাবে উচু থেকে এত কাছে দেখা যায়। অবশেষে এক ঘন্টা হাটার পর পৌছা যায়। শেরকর পাড়া ঢুকতে চা নাস্তা ব্যবস্থা আছে। পাহাড় কেটে মাচাংয়ের ঘড়ের সাথে ছোট দোকান। বাহিরে বসার জায়গা। চা পানে একটু সজিবতা ফিরে আনা যায়। শেরকর পাড়া একটি গ্রামের নাম। এ পাড়ায় আদিবাসী বম জনগোষ্ঠীর বসবাস। গ্রাম প্র্রধান তোম থং। আর শেরকর পাড়া নামের মানে টক জাতীয় ফল। ২৩ থেকে ২৪ টি পরিবারের বসবাস। থাকার জন্য স্থানীয় লান হুন লিয়ানের পাড়ার মূল সেন্টার নামের একটি ঘরে ব্যবস্থা করা যায়। এটিও মাচাং ঘর। ব্যাগ রেখে ঝর্নার পানিতে গোসল সেরে নেয়া যায়। খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে পাড়ায়। ভ্রমন পিপাসু মানুষ এখানে আসে। মজার বিষয় হলো জুম চালের ভাত। প্র্রতি প্লেট খাবার ১৫০ টাকা। রাত্রী যাপন ২০০ টাকা।

            ভ্রমনের শেরকর পাড়া অবস্থানের সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে তাজিংডং সৌন্দর্য্য উপভোগে কাংখিত লক্ষ্য পৌছানোর স্বপ্ন। সমুদ্র পিষ্ট থেকে ৩,৩০০ ফিট উপর উঠার পালা তাজিংডেংর উদ্দেশ্য। শেড়কর পাড়া থেকে আবার শুরু হবে পাহাড়ি পথ মাড়ানো উদ্দেশ্য তাজিংডং সৌন্দর্য্য উপভোগ। যাত্রা পথে জুম চাষের জন্য তৈরি ছোট পরিত্যাক্ত জুম ঘর চোখে পড়বে। দৃষ্টিনন্দন জুম কুড়ে ঘর আর পাহাড়ি সৌন্দর্য্য থেকে যেতে ইচ্ছে হবে পাহাড়ে। আরকেটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো চাল কুমড়োর অবাধ ফলন। যততত্র ছড়িয়ে ছিটি আছে। কেউ ছুয়েও দেখনা। এবার তাজিংডেংর কাছা কাছি এসে হঠাৎ হাতির শক্তি নিয়ে তাজিংডং জয় করা যায়। শুরু হবে ছবি তোলা। গ্রুপ ছবি একক ছবি। জয়ের নেশা মানুষ কে পেয়ে বসলে যা হয়। অরন্য থেকে এই আধুনিক সভ্যতা জয়ের নেশার ফসল জন পতি ৬০০০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। থানছি থেকে শেরকর পাড়ার উদ্দেশ্য রওনা হবার কিছু সময় পর তাজিংডং জয় করে ফিরে আসা কয়েকটি টিমের সংঙ্গে পথে দেখা হবে। তাজিংডং চূড়ায় আগে যারা জয় করেছে তাদের রেখে যাওয়া জাতীয় পতাকা শরীরে জড়িয়ে ছবি তুলা যাবে। দেশের রাজধানী ঢাকায় টুরিষ্ট হেভেন বাংলাদেশ নামে একটি এজেন্সী আছে। এ প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় শত কষ্টের পর একটু আয়েশে ভ্রমনে অবারিত আনন্দ চাইলে আপনি ঘুড়ে আসতে পারেন সর্বোচ্চ পাহাড় তাজিংডং। বান্দরবানে তাজিংডং সৌন্দর্য্য উপভোগে সবার জন্য স্বাগতম ও শুভকামনা।

খবরটি 857 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen