ফিচার ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রামের পিছেয়ে পড়া আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ব্যবস্থা ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে ধীরগতিতে এগিয়ে চলছে। আদিবাসীদের মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে বিশেষ সুযোগ সুবিধা নেই বললে চলে। এখানে আদিবাসীরা প্রতিকুল পরিবেশের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে সফলতা অর্জন করছে। পার্বত্য অঞ্চলে ১০ ভাষাভাষী ১১ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। বৈচিত্র্যময় ১১ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষুদ্রতম একটি অংশ আদিবাসী খুমী জনগোষ্ঠী। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আদিবাসী খুমী জনগোষ্ঠীর সংখ্যায় প্রায় ৩ হাজার জন বিগত পরিসংখ্যান তথ্য সূত্র থেকে জানা যায়।

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় আদিবাসী খুমী জনগোষ্ঠীর সামাজিক ব্যক্তিত্ব, উন্নয়ন কর্মী ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিত্ব তিনি হলেন লেলুং খুমী। তিনি আদিবাসী খুমী জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির উন্নয়নে গবেষক ও লেখক হিসেবে সুনামধন্য পরিচিতি রয়েছে। এ অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ক্ষুদ্র অংশের কিন্তু বৃহত্তর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন লেলুং খুমী আদিবাসী খুমী জনগোষ্ঠীর প্রথম মাস্টার ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তার সংক্ষিপ্ত শিক্ষা জীবন সর্ম্পকে বিশ্লেষণ করলে জানা যায়। লেলুং খুমীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় উন্নয়ন বোর্ড পরিচারিত রুমা আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় খেকে। তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে মনোবল নিয়ে সময়ের গতির সাথে শিক্ষার জীবন চলে নিরন্তর গতিতে। উচ্চ শিক্ষার অদম্য স্পৃহার লেলুং খুমীর রুমা আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় খেকে এসএসসি পাসের পর এভাবে এইচএসসি, বিএসএস ও শিক্ষার ঝুড়িতে শেষ পর্যস্ত যোগ হয় মাস্টার ডিগ্রী। তিনি ২০১০ খ্রীস্টাব্দে সৌভাগ্যের সাথে অস্ট্রেলিয়া এক University থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করেন। অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী লাভ করার ১০ বৎসর পর ২০২০ সালে আদিবাসী খুমী জনগোষ্ঠী থেকে লেলুং খুমী কৃতিত্বের সাথে East Delta University থেকে Public Policy and Leadership এ বিষয়ে প্রথম মার্স্টার ডিগ্রী অর্জন করেন।

লেলুং খুমী বলেন, উচ্চ শিক্ষা অর্জনের প্রত্যাশায় আমার প্রিয় East Delta University, Chittagong, Bangladesh এর Master in Public Policy and Leadership বিষয়ে ১ম ব্যাচ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে গিয়েছিলাম। সেদিন ছিল ১২ জুলাই ২০১৯ খ্রীস্টাব্দ। University টি বাংলাদেশের একটি মানসম্মত এবং চমৎকার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইংরেজীতে পাঠদান করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর East Delta University কর্তৃপক্ষসহ শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও শিক্ষিকাবৃন্দ ও সকল শুভাকাঙ্খীদের যে অনুপ্রেরণা পেয়েছি কৃতজ্ঞতার সহিত ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। বস্তুত নিজেকে বাংলাদেশের খুমীদের মধ্যে প্রথম ও একমাত্র মার্স্টার ডিগ্রীধারী দাবি করার সৌভাগ্য অর্জন করলেও কত পিছিয়ে থাকলে এমনটি হতে পারে তা ভেবে খুবই কষ্ট পাই। নানান প্রতিকূল বাস্তবতা অতিক্রম করে গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রীস্টাব্দে Master Degree টা অর্জন করেছি। আমার উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে কঠিন বাস্তবতা ও অভিজ্ঞতা থেকে প্রত্যাশা করি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর পিছেয়ে পড়া অন্যান্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ব্যবস্থা ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে স্থানীয় প্রশাসন, আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রধান পৃষ্টপোষক ভূমিকা থাকা অতিব প্রয়োজন। মার্টিং লুথার কিং এর সুরে বলতে চাই উড়তে না পারলে দৌঁড়াতে হবে, দৌঁড়াতে না পারলে হাটতে হবে, হাটতে না পারলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও সামনে এগিয়ে যেতে হবে, এমন দর্শনকে লালন করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের অনেকে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরনা দিয়ে সর্বদাই পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা সহিত সরণ করছি।

খবরটি 1,109 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen