জাতীয় ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় যেতে পারলে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা হবে এ বিষয়টি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে ১১ টি পরিকল্পনার কথা সংসদকে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ ১১ পরিকল্পনা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে থাকবে এ বিষয়টি জানান তিনি। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ। সে সময় ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালে নিরাপদ ব-দ্বীপ পরিকল্পনার রূপরেখা প্রদান করা হয়েছিল।   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রথম ধাপ হিসেবে ইতোমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং মাথাপিছু গড় আয় হবে ৫ হাজার ৯০৬ ডলারের উপরে এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ যেখানে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের অধিক। বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫১, ২০৩১ সালে ৯ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০৩১ সালের মধ্যে দেশে চরম দারিদ্র্যের অবসান হবে এ দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে।

            প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন,সংসদে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে এমন ১১ টি পরিকল্পনার সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামী নির্বাচনী ইশতেহারের মাধ্যমে যথা সময়ে প্রকাশ করা হবে। ১১ দফা পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে-২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ‘বিনির্মাণ। আর স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তিতে হবে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। এজন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে এ বিষয়টি জানান তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১ ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ২য় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১; স্মার্ট ডেল্টা বিনির্মাণে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, ৯ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২৬-২০৩০, ১০ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩১-২০৩৫, একাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩৬-২০৪০ ইত্যাদি।

            প্রধান মন্ত্রী জানান, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন পরিচালনা ও বৃদ্ধি করা হবে। ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা হবে। সড়ক, নৌ, রেল ও বিমান পথে যাতায়াতের গৃহীত সব প্রকল্প শেষ করা হবে। ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এ বিষয়টি  উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন করে রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন বাজার সন্ধান করা হবে। একই সঙ্গে দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ডিজিটাল ডিভাইসের নিজস্ব বাজার সম্প্রসারণ করা হবে।

            সরকার প্রধান আরও বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনে বিজয়ী হলে মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও সবকিছু মিলিয়ে মানুষের চিকিৎসা তৃণমূল পর্যন্ত নিশ্চিত করা হবে। সে সাথে দেশের সব মানুষের জীবনমান উন্নত করার পাশাপাশি প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তর করে সোনার বাংলাদেশ গড়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করা হবে।

খবরটি 345 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen