জাতীয় ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় এসেছে, দেশের সম্পদ লুট করেছে। সে সম্পদ বিদেশে পাচার করে এখন আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। আর দেশের মানুষ যখন কষ্ট পায়, তখন তারা আরও কষ্ট দেয়। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। যারা বোমা মেরে, আগুন দিয়ে মানুষকে হত্যা করতে পারে তারা কখনো মানুষের কল্যাণ করতে পারে না। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার হেলিপ্যাড মাঠে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি জামায়াত ২০ দলীয় জোট যখন ক্ষমতায় এসেছে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। আর আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষের কল্যাণ হয়, ফসল উৎপাদন বাড়ে, মাছ উৎপাদন বাড়ে, তরিতরকারী ফলফুল উৎপাদন বাড়ে, মানুষ খেয়ে পড়ে সুখে থাকে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। গত ১৪ বছরে আজকের বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আপনাদের কাছে আমার আহ্বান নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। আগামীতে একমাত্র নৌকা মার্কার সরকার আসলে আপনাদের উন্নতি হবে, দেশের উন্নতি হবে। এ হাওর অঞ্চলে আমরা যে উন্নয়ন বাস্তবায়ন করছি, তা অব্যাহত থাকবে। এ সময় সমাবেশে উপস্থিত জনতার কাছ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার ওয়াদা আদায় করে নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, এ মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রামসহ কিশোরগঞ্জের প্রত্যেকটি সিটে গত নির্বাচনে এবং পরপর এ তিন নির্বাচনে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন। তাই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। এ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা, সে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এ নৌকায় ভোট দিয়েছে আজকে কিশোরগঞ্জ আর অবহেলিত নেই। উন্নত একটি জেলায় উন্নীত হয়েছে, প্রতিটি উপজেলা উন্নত হচ্ছে এবং নৌকায় ভোট দিয়েছে এদেশের মানুষ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে এবং আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিশোরগঞ্জ সবসময় রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে সারা বাংলাদেশ পরিচালনা করছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিলে যে দেশের উন্নতি হয় সেটা আজকে সর্বজন বিদীত। মঞ্চে উপস্থিত রাষ্ট্রপতির ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গত নির্বাচনে রাষ্ট্রপতির ছেলেকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের প্রতি কতৃজ্ঞতা জানাই। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাই আপনাদের পাশে আমরা সব সময় আছি।

মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজাল প্রমুখ। মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল হক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ও সাধারণ সম্পাদক বাবু সমীর কুমার বৈষ্ণব সঞ্চালনা করেন।

এর আগে বেলা ১১ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে মিঠামইন উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে নির্মিত এ সেনানিবাসের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে মিঠামইন সদরের কামালপুরে রাষ্ট্রপতির পৈতৃক বাড়িতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। দুপুর পৌনে ১ টার দিকে সেখানে পৌঁছান তিনি। রাষ্ট্রপতির বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী জোহরের নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একই টেবিলে দুপুরের খাবার খান। পরে দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মিঠামইন সদরের হেলিপ্যাড মাঠের সুধী সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত হন।

খবরটি 320 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen