জাতীয় ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছরের বেশি সময় বাকী থাকলেও আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী জনসভায় নামছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৯ অক্টোবর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সশরীরে উপস্থিত থেকে এই নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন বলা হলেও মূলত এর মধ্যে দিয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। আগামী ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠক থেকে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনসহ একগুচ্ছ কর্মসূচি আসছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে দলের সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম মেয়াদউত্তীর্ণ সংগঠনের সম্মেলন, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বড় ধরনের সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এ জন্য ঢাকার চারপাশের জেলাগুলো প্রয়োজনীয় দিক নিদের্শনা দেওয়া হবে। আপাতত বিএনপির কর্মসূচিতে বাঁধা না দিলেও সাংগঠনিক শক্তি জানান দিতে চান ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডি কার্যালয়ে অনির্ধারিত বৈঠকে দলের অধিকাংশ নেতা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

            বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী ২৯ অক্টোবর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী (সাবেক বাণিজ্য মেলার মাঠ) ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলা সম্মেলনকে জনসমুদ্রে রূপ দিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সবাইকে প্রস্তুতি নিতে নিদের্শ দেন। তিনি বলেন, বিএনপি রাজধানীসহ সারাদেশে সমাবেশ করছে। আমাদেরও সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে হবে। জেলা সম্মেলন হলেও সেখানে লাখো জনতার উপস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভায় রূপ দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকী থাকলেও এখন থেকে নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নামছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের পাশাপাশি সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলনে তিনি যোগ দেবেন। এছাড়া আগামী বছর জানুয়ারিতে দু-চারটি বিভাগীয় সমাবেশে তার যোগ দেওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যেসব জেলায় তিনি সফর করেননি, সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে বিভাগীয় ও জেলা নির্বাচনী জনসভার তারিখ প্রস্তুত করা হবে।

            আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক এবং ২৯ অক্টোবর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। কার্যনির্বাহী বৈঠক থেকে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত আসবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানে উৎসব। নেতাকর্মীদের মহামিলন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সর্বোচ্চ উপস্থিতি হবে এমনটাই প্রত্যাশা করি। জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী জনসভা শুরু করছেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ভোট নিয়ে সারা বছর কাজ করি। দলীয় সভানেত্রী যে জনসভায় থাকবেন সেখানে জনসমুদ্র হবে। আর সামনে নির্বাচন। সে কারণে ভোট তো চাইতে পারেন।

            নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, অনির্ধারিত বৈঠকে বিএনপির সমাবেশ, আন্দোলন নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের নীতি হচ্ছে, গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ বাধা দেবে না। বিএনপি যেভাবে সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ সেভাবে বিভাগীয় ও জেলা সমাবেশ করবে। প্রথমে ঢাকার লাগোয়া গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ করবে দলটি। এরপর পর্যায়ক্রমে সব বিভাগ ও জেলায় সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানো হবে। বৈঠকে এ বিষয়টি জোর দেওয়া হয়েছে।

            ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ বলেন, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি চেয়েছিলাম আমরা। প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। আগামী ২৯ অক্টোবর জেলা সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের স্মরণকালের উপস্থিতির মাধ্যমে আমরা প্রমাণ দিতে চাই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি।

            বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুর রহমান, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

খবরটি 335 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen