স্বাস্থ্য ডেস্ক: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে শিশুদের টিকা পরীক্ষামূলক টিকাদান করা হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের এ কার্যক্রমের আওতায় দেশের ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে করোনা টিকার দুই ডোজ প্রয়োগ করা হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ৫-১১ বছর বয়সি ১৬ শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগ করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রথম দিকে ৫-১১ বছরের শিশুদের টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম সারাদেশের ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী সময়ে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে। টিকার প্রথম রাউন্ড সম্পন্ন হওয়ার দুই মাস পর দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রয়োগ শুরু হবে (দ্বিতীয় ডোজ কার্যক্রম)। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩১ কোটি টিকা পেয়েছে। এর মধ্যে ফাইজারের ভ্যাকসিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি, মডার্না সাড়ে ৫ কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসন ৬ লাখ। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে প্রায় ১১ কোটি টিকা বিনামূল্যে পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া নিজেদের অর্থায়নেও টিকা দিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের অনেক দেশ বিনামূল্যে টিকা দিতে পারেনি, সেখানে বাংলাদেশ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে টিকার জন্য।

            স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের করোনা সংক্রমণ রোধে ফাইজারের বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরি করা টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই টিকা যুক্তরাষ্ট্রেও দেওয়া হচ্ছে। দেশের ওষুধ প্রশাসন এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে। এটি শিশুদের জন্য নিরাপদ। বৃহস্পতিবার যে ১৬ শিশু শিক্ষার্থীর দেহে পরীক্ষামূলকভাবে এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না গেলে আগামী ২৫ আগস্ট থেকে সারাদেশে পুরোদমে এ কার্যক্রম শুরু হবে। টিকাদান কার্যক্রম চলবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ১২ দিন। দেশের ২ কোটি ২০ লাখ শিশুর জন্য প্রয়োজন হবে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনুদান হিসেবে ৩০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী কোভ্যাক্সের অবশিষ্ট টিকা যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে দেশে এসে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। শিশুদের জন্য ফাইজারের তৈরি এ টিকা খুবই নিরাপদ ও ভালো বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

            কোভিডের টিকা প্রদানের শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর যথাযথ দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ টিকাদানে সফলতা অর্জন করেছে। বয়স্কদের টিকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিরাট সাফল্য রয়েছে। এছাড়া, ১২-১৮ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম ডোজ ৯৭ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে।

            অনেক দেশ যেখানে ১০-১৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারেনি, সেখানে বাংলাদেশ দেশের মানুষকে সুরক্ষার আওতায় নিয়ে এসেছে। টিকা কার্যক্রমে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম হয়েছে। টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমে সফলতা অর্জন করে বাংলাদেশ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, বস্নুমবার্গ বাংলাদেশের টিকা কার্যক্রমের প্রশংসা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারও বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির প্রশংসা করেছে। এছাড়া, গণটিকার আওতায় এক দিনে এক কোটি বিশ লাখ মানুষকে টিকা প্রয়োগ করে বাংলাদেশের তার সক্ষমতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

খবরটি 421 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen