স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান: পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন পার্বত্য জেলায় ব্রিটিশ কর্তৃক প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন-১৯০০ বহাল রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করার দাবী জানিয়েছেন (মৌজা প্রধান) হেডম্যানরা। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইসাছমিন পারভীন তিবরীজির, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর পাঠানো এক স্মারকলিপি দেয়া হয়। বুধবার জেলা প্রশাসক সাথে দেখা করে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন তিন পার্বত্য জেলার হেডম্যানরা। উক্ত স্মারকলিপিতে বান্দরবানের ৬০ জন হ্যাডম্যান গণস্বাক্ষর প্রদান করে নিজেদের উদ্বেগ জানান।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদানসহ এদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সনাতনী রীতি-প্রথাসমূহ সংরক্ষণের জন্য বৃটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ প্রনয়ন করে। এ আইনের আলোকে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদন হয়। চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পাবর্ত্য (রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) জেলা পরিষদ সংশোধন হয়। পার্বত্য চুক্তিতে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০। স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এ রিভিউ উদ্দেশ্য হল বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক, ধর্ম নিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী প্রগতিশীল চরিত্রকে ব্যহত করা। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভিন্ন পাহাড়ী জাতিসত্তার স্বতন্ত্র সত্তা, পরিচয়, স্বকীয়তা, ঐতিহ্য, জীবনাচার ও মৌলিক অধিকারকে ভুলুন্ঠিত করা যা সংবিধানের পরিপন্থী।

বান্দরবান জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের হেডম্যান কার্বারী এসোসিয়েশনের সভাপতি হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা, সাধারণ সম্পাদক উনিহ্লা মারমাসহ অন্যান্য হেডম্যানরা। অপরদিকে রাঙ্গামাটিতে স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য রাঙামাটি হেডম্যান এসোসিয়েশেনের সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, সহ সভাপতি এড. ভবতোষ দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক কেরোল চাকমা, যুগ্ম সম্পাদক থোয়াই অং মারমা, সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা, দপ্তর সম্পাদক দীপন দেওয়ান টিটুসহ অন্যান্য হেডম্যানরা।

২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের আমলে হাইকোর্ট বিভাগের এক মামলায় এ আইনকে মৃত আইন ঘোষণা করা হয়। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৭ সালে আপীল বিভাগ এ রায়কে খারিজ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ বৈধ এবং কার্যকর আইন মর্মে ঘোষণা করে। আপীল বিভাগের উক্ত রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে ২৫ অক্টোবর আব্দুল আজিজ নামে একজন আপীল বিভাগে পুনরায় রিভিউ আবেদন করে। নিষ্পত্তি হওয়া বিষয়টি পুনরায় উত্থাপিত হওয়ায় পাহাড়ের হেডম্যানরা উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।

খবরটি 397 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen