তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর ধরণ অর্থাৎ সেটি যোগাযোগ উপগ্রহ নাকি আর্থ কিংবা আবহাওয়া উপগ্রহ হবে সে বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ বাস্তবায়নে কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। বৃহস্পতিবার মন্ত্রী ঢাকায় মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের চতুর্থবর্ষ পদার্পণ উপলক্ষ্য বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

            রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিএসসিএল এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক মো: সিরাজউদ্দিন, বিটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন, সাবমেরিন ক্যাবল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সাহাব উদ্দিন, টেশিস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকরুল হায়দার চৌধুরী, ক্যাবল শিল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগদীশ চন্দ্র এবং বিএসসিএল এর পরিচালনা পরিষদের সদস্য ড. সাজ্জাদ হোসেন প্রমূখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসসিএল এর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান।

            টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাঙালির মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন পূরণের দিন ১২ মে ২০১৮ সাল। এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস স্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ করা হলো দেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। বিশ্বে স্পেস সোসাইটিতে ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশ হিসেবে লিপিবদ্ধ হলো বাংলাদেশের নাম। আকাশে বাংলাদেশের পদচারণার প্রথম সোপান বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক সূচনা অবিশ্বাস্য এক অগ্রযাত্রা। এই অগ্রযাত্রা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় চলমান ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার এক উজ্জ্বল সোপান অতিক্রম করা। টেলিকম প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে সেই সময় বহির্বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের আধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা হয়।

            প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে ২০০৯ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী গর্বিত দেশ হিসেবে তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ্যোগ নেন। মহাশূন্যে উৎক্ষেপিত ৩৭০০ কিঃ গ্রাঃ ওজনের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ১৫ বছরের অধিক সময় মহাশূন্য থেকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে কম্পিউটারে বাংলাভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সুবিধার ব্যাপক প্রসার ঘটছে। তন্মেধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’ল সমগ্র বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমায় নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচারের নিশ্চয়তা, বর্তমানে বিদেশী স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রদেয় বার্ষিক ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয়, ট্রান্সপন্ডার লীজের মাধ্যমে বৈদিশিক মুদ্রা আয়।

            টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবার পাশাপাশি টেলিমেডিসিন, ডিজিটাল লার্নিং, ডিজিটাল এডুকেশন, ডিটিএইচ প্রভৃতি সেবা প্রদান করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাবমেরিন অথবা টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট যোগাযোগ সুবিধা প্রদান, স্যাটেলাইটের বিভিন্ন সেবার লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম চার্জ বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, স্যাটেলাইট টেকনোলজি ও সেবার প্রসারের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ১৪টি সি ব্যান্ড এবং ২৬টি কিউ ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডারসহ মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছ। ৪০টি ট্রান্সপন্ডার দ্ধারা বাংলাদেশ, সার্কভূক্ত দেশসমূহ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও ‘স্তান’ভূক্ত দেশসমূহে টেলিযোগাযোগ সুবিধা প্রদান করতে পারবে। ইতোমধ্যে ফিলিপাইন ও নেপালে স্যাটেলাইট সেবা বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে।

খবরটি 555 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen