ফিচার ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামের শক্তি ও সাহসের উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা। আগরতলা মামলায় বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তি, সাত মার্চের ভাষণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নেপথ্যে কাজ করেছে বঙ্গমাতার পরামর্শ। বঙ্গবন্ধুর বন্দীত্বের কালে দৃঢ়তার সঙ্গে সামলিয়েছেন সংসার, দলের কর্মীদের কাছে ছিলেন সাহসের প্রতিমূর্তি। মুক্তিকামী বাঙালির স্লোগানে উন্মাতাল ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান; দিনটি ছিলো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। কবির ভাষায় জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন, গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি। বঙ্গবন্ধুর ১৮ মিনিটের সেই ভাষণে দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করার শপথে দীক্ষিত হয়েছিল বাঙালি জাতি। সাত মার্চের ভাষণের নেপথ্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন নিজের মনের কথাই যেন জনগণের সামনে তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু তাই করেছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদ বলেন, চারপাশ থেকে ওনার কাছে এতো রকমের কথাবার্তা হচ্ছে। উনি শুধু বলেছিলেন তোমার মনে যা আসে, তোমার মন যা বলবে তুমি তাই করবে। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান সরকারের দায়ের করা আগরতলা মামলায় প্যারোলে নয় শেখ মুজিবের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছিলেন বঙ্গমাতা, অটল ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে।

সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদ জানান, দলের থেকেই অনেকে উঠেপড়ে লেগেছিলেন কিন্তু উনি বলেছিলেন যে না, প্যারোলে কিছুতেই না আসতে হলে একদম মুক্ত হয়ে। প্যারোলে যদি যেতেই হয় তাহলে আর যেন ৩২ নম্বরে ফেরা না হয়। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় সংসারের দায়িত্ব, মামলা পরিচালনার ব্যবস্থা, দল সংগঠিত করা ও আন্দোলন পরিচালনায় বঙ্গমাতা ছিলেন ধৈর্য্য, দক্ষতা আর সাহসিকতার প্রতিমূর্তি।

নাসরিন আহমেদ বলেন, জেলে যেতেন টিফিনক্যারিয়ার নিয়ে। যে টিফিনক্যারিয়ারে নিজের হাতে রান্না করা খাবার নিয়ে যেতেন। আর ফিরে আসতেন সেই টিফিনক্যারিয়ারের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সব নির্দেশগুলো নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর আমৃত্যু ছায়াসঙ্গী শেখ ফজিলাতুন্নেসা। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে ধানমণ্ডির রক্তাক্ত ৩২ নম্বরেও তিনি বঙ্গবন্ধুর পরলোক যাত্রার সঙ্গী।

 

খবরটি 502 বার পঠিত হয়েছে


আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Follow us on Facebookschliessen
oeffnen